সামনেই শুরু হতে চলেছে বাঙালির প্রিয় দুর্গোৎসব। উৎসবের আমেজে আনন্দমুখর হয়ে রয়েছে সারা রাজ্যের মানুষ। রাজ্য জুড়ে পুজোর প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে। আর কয়েকদিন পর থেকেই ছুটি (Durga Puja Holiday) পড়তে চলেছে রাজ্যের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন সরকারি অফিস গুলিতে। কিন্তু দুর্গাপুজো শুরু হবার আগেই অক্টোবর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে পশ্চিমবঙ্গে ছুটির তালিকায় যুক্ত হল আরও দুটি অতিরিক্ত অকাল ছুটি। এই উপরি ছুটি পেয়ে খুশি রাজ্যের পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরা। তবে এই ছুটি কিন্তু সরকার দেয়নি। এই ছুটি ঘোষণা করেছে ক্ষোদ কর্মচারীরাই! দাবী আদায়ের ছুটি, সরকারের বিরুদ্ধে ছুটি।
তবে সরকারি কর্মচারীরা মোটেই খুশি নন। কিন্তু কেন খুশি নন তারা আর ঠিক কোন দুই দিন থাকবে এই ছুটি? জানতে চান? তাহলে পড়তে থাকুন।
২০২০ সাল থেকে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের উদ্যোগে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মীরা বিক্ষোভ শুরু করেন এই দাবি নিয়ে যে এবার থেকে তাদেরও কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতা প্রদান করতে হবে। প্রথমে সুপ্রিম কোর্টে এই নিয়ে মামলা দাখিল করা হয়।
সুপ্রিম কোর্ট কর্মীদের স্বপক্ষে রায় দিলেও রাজ্য সরকার তা মানতে অস্বীকার করে। রাজ্য সরকার তাদেরকে কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়া তো দূর, পূর্বের সমস্ত বকেয়া মহার্ঘ ভাতাও মেটাতে রাজি হয়নি। এইভাবে যত দিন যায় রাজ্য সরকারি কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনাও বৃদ্ধি পেতে থাকে। অবশেষে চলতি বছরের জুন মাস থেকে রাজ্য সরকারের তরফের বৃদ্ধি করা হয় ৩ শতাংশ মহার্ঘভাতা।
“কিন্তু এটা কি আমাদের প্রাপ্য? কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মচারীরা বছরে দুবার মহার্ঘ ভাতা পেয়ে থাকে। একটি জানুয়ারিতে এবং অপরটি জুলাই মাসে। সেই অনুযায়ী জুলাইয়ে তাদের মহার্ঘ ভাতা ৩৯ শতাংশ এর পর আরও ৩ শতাংশ বেড়ে হয় মোট ৪২ শতাংশ। যেখানে কেন্দ্রীয় সরকার জিনিসপত্রের দামের সঙ্গে তাল মিলিয়ে বাড়াচ্ছে তার কর্মচারীদের বেতন সেখানে আমাদের রাজ্য সরকার কেন সেই নিয়ম মানছে না?”
এই বক্তব্যের সৃষ্টি হয় কর্মীদের মধ্যে। যার দরুন এখনো পর্যন্ত বিক্ষোভ থামেনি সংশ্লিষ্ট বিষয়কে ঘিরে। তাই এবার রাজ্যের সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের উদ্যোগে কর্মীরা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অক্টোবর মাসে দু দিন তারা কর্ম বিরতি পালন করবেন। সেই কারণেই পুজোর আগে রাজ্য সরকারি কার্যালয় গুলি বন্ধ থাকতে চলেছে সেই দুদিন। তবে শুধু সরকারি অফিস নয়, এ দুদিন ধর্মঘটের কারণে বন্ধ থাকতে চলেছে রাজ্যের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। যদিও নিজেদের দাবি আদায়ে কর্মীদের সরকারি কাজ অচল করাকে অনেকেই সমর্থন করছেন না, তবে আদালতের নির্দেশের পরও কর্মীদের বকেয়া না দেওয়ায় ধর্মঘট সফল করতে বদ্ধ পরিকর সংগ্রামী মঞ্চের সরকারি কর্মীরা।
আরও পড়ুন, মোবাইল ফোন দিয়ে যেকোনো ব্যাংক একাউন্টের ব্যালেন্স চেক করুন।
সূত্রের খবর, চলতি মাসের ১০ এবং ১১ তারিখ অর্থাৎ মঙ্গল এবং বুধবার পর পর দুদিন রাজ্য সরকারি কর্মীরা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন। এদিন না তো কেউ অফিসে যাবেন না, আর অফিসে গেলেও সেখানে কোন কাজ করবেন না, এমনটাই সংকল্প নিয়েছেন তারা। উল্লেখ্য, গত মাসেই রাজ্য সরকারের অধীনে কেন্দ্রীয় হারে বেতন বৃদ্ধির বিষয়ে বিভিন্ন রাজ্যের সরকারি কর্মী সংগঠনের মধ্যে একটি বৈঠক হয় তেলেঙ্গানার হায়দ্রাবাদে।
আরও পড়ুন, রাজ্য সরকারি কর্মী ও পেনশনারদের বড় আপডেট। এক ধাক্কায় অনেক লাভ।
আর সেখানে আমাদের পশ্চিমবঙ্গের সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফ থেকেও এ রাজ্যে কেন্দ্রীয় হারে বেতন দানের উদ্দেশ্যে চিঠি দেওয়া হয় সেখানে উপস্থিত অন্যান্য দলগুলিকে। যাইহোক এ ব্যাপারে কোনো সদুত্তর মেলেনি এখনো। এবার এটাই দেখার কর্মীদের এই সিদ্ধান্তে রাজ্য সরকারের প্রতিক্রিয়া কি হয়।
Written by Nabadip Saha.