পশ্চিমবঙ্গে বকেয়া ডিএ কবে পাবেন? সঠিক উত্তর জেনে নিন।
বকেয়া ডিএ (Dearness Allowances) নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন এক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তৃণমূলের দলীয় কর্মসূচিতে দিদির দূত হয়ে যিনি গিয়েছিলেন, তাকেই সরাসরি প্রশ্ন করেন ওই প্রধান শিক্ষক। কবে বকেয়া Dearness Allowance পাওয়া যাবে? বর্তমানে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা বকেয়া ডিএ পাওয়া নিয়েই একের পর এক আন্দোলন কর্মসূচি করে যাচ্ছেন। আর সে প্রশ্নের জবাবে সামনে এলো আরেক ঘটনা।
পসচিম্বনেগ্র রাজ্য সরকারী কর্মীরা, একদিকে যেমন তারা আইন আদালতের শরণাপন্ন হয়েছেন, ঠিক তেমনি অপরদিকে বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি রাস্তায় নেমে করছেন। আর তার ফলে একটাই বিষয় স্পষ্ট, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের এখন একটাই লক্ষ্য বকেয়া ডিএ পাওয়া।
আর এই বিষয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের একাধিক সংগঠনের তরফেও বিভিন্ন আন্দোলন কর্মসূচি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর তরফে রাজ্য সরকারকে নিশানা করা হয়েছে। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী রাজ্যের আর্থিক পরিস্থিতি তুলে ধরে তৃণমূল সরকারকে নিশানা করেছেন।
সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ দিতেই হবে। এটা তাদের ন্যায্য প্রাপ্য। তাদের বঞ্চিত করা হচ্ছে, জানিয়েছেন শুভেন্দু। তবে পাশাপাশি এটাও বলেছেন, বকেয়া DA দিতে গেলে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প বন্ধ হয়ে যাবে। লক্ষ্মীর ভান্ডারের টাকা দেওয়া বন্ধ হয়ে যাবে। সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ দেওয়ার প্রসঙ্গ নিয়ে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করতে গিয়ে বর্তমানে শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত দুর্নীতির বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে বিরোধী রাজনৈতিক দলের পক্ষ থেকে।
এই বিষয়ে শুভেন্দু অধিকারী একাধিকবার বলেছেন, শিক্ষাক্ষেত্রে বিরাট দুর্নীতি হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৯৫২ জনের চাকরি গিয়েছে। প্রায় ৫০ হাজারের উপরে চাকরি জালিয়াতি হয়েছে। আগামী দিনে এই চাকরি বাতিল শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ২০ থেকে ২৫ হাজারে পৌছবে। আর ঠিক তখনই এই বাতিল শিক্ষকদের নিয়ে মিছিল করে যাওয়া হবে কালীঘাটে।
শুধু তাই নয়, রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বকেয়া ডিএ দেওয়ার প্রসঙ্গে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো যেভাবে আক্রমণ করছে, তাতে আরো একধাপ এগিয়ে শুভেন্দু স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতেই আগাম জানিয়েছিলেন, সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা কিছুদিনের মধ্যেই শুনানি হবে। আর তারপরেই বকেয়া ডিএ দিতে হবে।
বকেয়া ডিএ কবে পাব? প্রশ্নের প্রতিক্রিয়াঃ
এবার তৃণমূলের দিদির সুরক্ষা কবচ কর্মসূচিতে দিদির দূত হয়ে বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটিতে গিয়েছিলেন সাংসদ মালা রায়। আর তখন সাংসদ মালা রায়কে সরাসরি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রশ্ন করেন, তারা বকেয়া ডিএ কবে পাবেন? আর তার ফলে স্বাভাবিকভাবেই সাংসদ ওই প্রধান শিক্ষকের বিদ্যালয় এর বেশ কিছু অনিয়মের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। নিজের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেন না।
অথচ সবসময়ই বকেয়া DA নিয়ে তারা একাধিক বার বক্তব্য রাখছেন। স্কুলে প্রধান শিক্ষকের দেরিতে আসা থেকে শুরু করে মিড ডে মিলে (Mid Day Meal) বেশ কিছু অনিয়মের অভিযোগ করা হয় তৃণমূলের তরফে। ফলে বিপাকে পড়েছেন প্রধান শিক্ষক। ওই প্রধান শিক্ষককে শোকজ পর্যন্ত করা হতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
ফলে এই ক্ষেত্রে অনেকেই মনে করছেন, যেহেতু সরাসরি সাংসদের উদ্দেশ্যে এই প্রশ্ন করা হয়েছিল, সেই কারণেই তার উপরে ক্ষুব্ধ শাসক তৃণমূল। বর্তমানে দিদির দূত কর্মসূচিতে বিভিন্ন জায়গায় তৃণমূলের সাংসদ, বিধায়ক, জনপ্রতিনিধিরা গেলে সেখানে বিক্ষোভের মুখে পড়তে দেখা যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে অনেকেই মনে করছেন, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর তরফে কৌশল করে এই বিক্ষোভ তৈরি করা হচ্ছে।
পোস্ট অফিসে PPF NSC ও সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনার নতুন নিয়ম, সময় থাকতে জেনে নিন।
সে যাই হোক, এখন ওই প্রধান শিক্ষক Arrear DA নিয়ে দিদির দূতকে প্রশ্ন করায় শাসক তৃণমূলের তরফেও তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করতে শোনা যাচ্ছে। নিয়ম অনুযায়ী, প্রধান শিক্ষককে শোকজ করা হলে তাকে অবশ্যই সরকারি নিয়ম মেনে জবাব দিতে হবে।
কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারী কর্মচারীদের মধ্যে বকেয়া মহার্ঘ ভাতা এর ফারাক যথেষ্টই। পঞ্চম বেতন কমিশন (5th Pay Commission) অনুযায়ী, কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারি কর্মীদের মধ্যে Dearness Allowances এর ফারাক ৩৪ শতাংশ। ষষ্ঠ বেতন কমিশন অনুযায়ী সেই ফারাক দাঁড়ায় ৩৫ শতাংশে।
ষ্টেট ব্যাংক গ্রাহকদের এই সপ্তাহে 400 টাকা চার্জ দিতে হবে, জানতে ক্লিক করুন
পঞ্চম বেতন কমিশনের ৩৪ শতাংশ DA দেওয়ার জন্য কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন। আর তারপরেই হাইকোর্টের তরফে তিন মাসের মধ্যে বকেয়া DA দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু হাইকোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে SLP দাখিল করে। জানুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে সেই DA মামলার শুনানি হওয়ার কথা থাকলেও হলফনামায় ত্রুটির কারণে শুনানি পিছিয়ে যায়। আগামী মার্চ মাসে সুপ্রিম কোর্টে বকেয়া ডিএ মামলার শুনানি হতে পারে।
Written by Satadal Ghosh.