শিক্ষক দিবসের দিন রাজ্যের ছাত্র ছাত্রীদের বিনামূল্যে মোবাইল ফোন দেওয়ার সিদ্ধান্ত পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষা দপ্তরের – Taruner Swopno Scheme.
এবার শিক্ষক দিবসে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের Taruner Swopno Scheme বা তরুনের স্বপ্ন প্রকল্পের মাধ্যমে বিনামূল্যে মোবাইল দিতে চলেছে রাজ্য সরকার, সমস্ত পড়ুয়ারা দেরি না করে এখনই আবেদন করুন।
আসন্ন শিক্ষক দিবস উপলক্ষে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে রাজ্যের সকল উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের দেওয়া হতে চলেছে বিরাট বড় উপহার। সম্প্রতি এক ঘোষণার মাধ্যমে রাজ্য সরকার জানিয়েছে এই সমস্ত স্কুল পড়ুয়াদের নগদ অর্থ প্রদান করা হবে মোবাইল, কম্পিউটার বা ট্যাব ইত্যাদি কেনার জন্য।
Free Mobile Phone Distributed in Taruner Swopno Scheme
আগামী ৫ ই সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবস উপলক্ষে রাজ্যে সমস্ত স্কুল পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের নিয়ে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। সেই অনুষ্ঠানে হাজির থাকবেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই অনুষ্ঠান মঞ্চেই তিনি যে সকল ছাত্র-ছাত্রীরা এ বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে চলেছেন তাদের হাতে তুলে দেবেন মোবাইল কেনার এই অর্থ।
রাজ্য সরকার রাজ্যের উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীদের উদ্দেশ্যে এই বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করে অনেক আগেই। ২০২০ সালে যখন ভারতে কোভিড 19 এর সংক্রমণ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়েছিল তখন ২০২০ – ২১ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র-ছাত্রীদের প্রথম তিনি মোবাইল কেনার জন্য অর্থ প্রদান করা শুরু করেন।
আসলে কোভিডের সময় সবকিছু বন্ধ থাকার কারণে এবং সামাজিক বিচ্ছিন্নতা অবলম্বন করার কারণে ছাত্র-ছাত্রীদের স্কুল কলেজ যাওয়া সম্পূর্ণ বারণ করে দেওয়া হয়েছিল। এমনকি পরীক্ষাও নেওয়া হতো অনলাইনে। আর সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী Taruner Swopno Scheme এর মাধ্যমে এই উদ্যোগ নেন তখন। তার এই কর্মসূচির মাধ্যমে যে সমস্ত গরিব ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে স্মার্টফোন অথবা ল্যাপটপ বা কম্পিউটার ইত্যাদি নেই তারা সহজেই তা ক্রয় করে অনলাইনে ক্লাস এবং পরীক্ষা দিতে সক্ষম হয়েছে।
আর তারপর থেকেই মুখ্যমন্ত্রী কখনো আর তার এই কর্মসূচি কে বন্ধ রাখেননি। তারপরের বছর অর্থাৎ ২০২২ থেকে ২৩ শিক্ষাবর্ষেও তিনি উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে এই অর্থ প্রদান করেছিলেন। আর সেই অনুযায়ী এই বছর অর্থাৎ ২০২৩ থেকে ২৪ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রছাত্রীরাও পেতে চলেছেন এবার সেই অর্থ।
এই কর্মসূচির মাধ্যমে প্রতিবছর উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার আগে পড়ুয়াদের মোবাইল বা ট্যাব বা ল্যাপটপ ইত্যাদি ক্রয় করার জন্য নগদ ১০ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয় রাজ্য সরকারের তরফ থেকে রাজ্যের স্কুল শিক্ষা দপ্তর মারফত। আর এই টাকা সরাসরি ট্রান্সফার করে দেওয়া হয় তাদের নিজস্ব ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। এখনো পর্যন্ত লক্ষ লক্ষ শিক্ষার্থী এই সুবিধা পেয়ে এসেছেন।
আর এবারও সেই অর্থ যথা সময় প্রদান করার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর এই কর্মসূচি নিয়ে সমালোচনার ঝড়ও উঠেছে অনেক। যেমন বঙ্গীয় শিক্ষাকর্মী সমিতির নেতা স্বপন মন্ডল বলেছেন, “যখন কোভিড পিরিয়ড চলছিল তখন ছাত্র-ছাত্রীদের অফলাইনে ক্লাস হওয়া বন্ধ ছিল। সেই কারণে রাজ্যের মানুষ তখন নিজেরাই দাবি করেছিল ছাত্র-ছাত্রীদের সুবিধার জন্য তাদেরকে মোবাইল বা ল্যাপটপ কেনার অর্থ প্রদান করতে।
কিন্তু এখন যখন পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক হয়ে গেছে এবং ছাত্রছাত্রীরা নিয়ম মত স্কুলে যাচ্ছে, সেখানে দাঁড়িয়ে Taruner Swopno Scheme চালিয়ে এই ফালতু অর্থ খরচ করার কোন মানে হয় না। বরং এই হাজার হাজার কোটি টাকা যদি রাজ্যের উন্নয়নের কাজে লাগানো যেত তাহলে অনেক ভালো হতো।” তার এই সমালোচনার পাল্টা উত্তর দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির কার্যকরী সভাপতি বিজন সরকার জানিয়েছেন, “ছাত্রছাত্রীরা হলো মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সন্তান তুল্য।
আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গের সকল ছাত্র ছাত্রীদের জন্য নতুন স্কলারশিপ।
তাদের কোন কিছু উপহারস্বরূপ দেওয়া মানে সেটা ফালতু অর্থ খরচ করা হয় না। বরং যারা এই সমালোচনার কথা বলছেন ধরে নিতে হবে তারা ছাত্র ছাত্রীদের স্নেহ করেন না। কারণ মুখ্যমন্ত্রী যখন ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষক দিবসে কিছু বিশেষ উপহার দিতে চাইছেন তখন সকলের খুশি হওয়া উচিত। এটা নিয়ে শুধু শুধু রাজনীতি না করে পড়ুয়াদের স্বার্থের কথাই ভাবা উচিত।
আরও পড়ুন, ভোটের আগে রান্নার গ্যাসের দাম কমলো মোদী সরকার। পশ্চিমবঙ্গে দাম কত হল?
আর যারা তরুনের স্বপ্ন প্রকল্প (Taruner Swopno Scheme) প্রসঙ্গে সমালোচনা করছেন তারা তো নিজেরাই স্কুলে ক্লাস না করিয়ে রাস্তায় মিটিং মিছিল করে বেড়াচ্ছেন। তারা আর এর মূল্য কি বুঝবেন। ছাত্র-ছাত্রীরাই হলো জাতির ভবিষ্যৎ। আর তাই তাদের কল্যাণের জন্য আমি মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ করব ভবিষ্যতে যেন Taruner Swopno Scheme এর মতো তিনি এরকম অভিনব পরিকল্পনা আরও গ্রহণ করেন।”
Written by Nabadip Saha.
শিক্ষা ও শিক্ষার্থীদের ধ্বংস করার একটি গভীর ষড়যন্ত্র। যুব সমাজের আবেগকে কাজে লাগিয়ে তাদের মোবাইলের নেশা ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যাতে তারা মোবাইলের মধ্যেই বুঁদ হয়ে থাকে। সরকারের অন্যায় কাজের বিরুদ্ধে যাতে তারা কোন প্রতিবাদ না করে। সমস্ত অভিভাবকদের এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়া উচিত।