পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষকদের জন্য নতুন নিয়ম ঘোষণা শিক্ষা দপ্তরের। না মানলে বেতন আটকে যাবে।

রাজ্যের অন্যান্য সরকারি কর্মচারীদের পাশাপাশি পদোন্নতি এবং বেতন বৃদ্ধির দাবিতে বহুদিন ধরেই আন্দোলন চালিয়ে আসছেন বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষকরা। বিভিন্ন ভাবে তারা সরকারকে চাপ দিতে থাকে নিজেদের দাবি পূরণের জন্য। তবে এবার সরকারি তরফে শিক্ষকদের জন্য জারি হল এমন এক বিশেষ নির্দেশিকা, যার ফলে মাথায় হাত পড়েছে শিক্ষকদের। পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ মারফত তৈরি করা হয়েছে এক নতুন নিয়ম।

শিক্ষকদের জন্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নির্দেশিকা

WBBSE পর্ষদের নির্দেশিকা অনুযায়ী, এই নিয়ম না মানলে পদোন্নতি অথবা বেতন বৃদ্ধি তো ঘটবেই না, বরং চরম বিপদে পড়তে হবে তাদের, সাফ জানিয়ে দিয়েছে পর্ষদ। পর্ষদের এরকম কড়া ঘোষণায় স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন তারা। চলুন দেখে নিই কি বলেছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ এই ব্যাপারে।

গত মাসে দুর্গোৎসব থেকে লক্ষ্মীপুজো এবং চলতি মাসে দিওয়ালি, ভাতৃদ্বিতিয়া সহ বিভিন্ন উৎসবের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ ছিল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি। মাঝে কয়েকদিন খুললেও পড়াশোনা ঠিকভাবে হয়নি তখন। যাই হোক, এখন সমস্ত ছুটি কাটিয়ে আবারো গতকাল থেকে খুলে গিয়েছে এই সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে সামনেই আসন্ন নবম শ্রেণী পর্যন্ত বিভিন্ন ক্লাসের বার্ষিক পরীক্ষা।

কি নির্দেশ দেওয়া হয়েছে?

এদিকে মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক স্তরের পড়ুয়াদের টেস্ট পরীক্ষাও এই মাসেই। এই পরিস্থিতিতে মধ্যশিক্ষা পর্ষদের ধারণা, দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকার জন্য অনেক ক্ষতি হয়েছে পড়াশোনায়। তাই এবার ছাত্র-ছাত্রীদের লেখাপড়ার ব্যাপারে বিশেষ জোর দিতে ইচ্ছুক তারা। ইতিমধ্যেই শিক্ষকদেরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, স্কুলে পঠন-পাঠনের ব্যাপারে আরো জোর দিতে। এমনকি প্রয়োজনে অতিরিক্ত ক্লাস করানোর ও আদেশ দেওয়া হয়েছে তাদের।

এদিকে বিভিন্ন স্কুলের তরফ থেকে পর্ষদের কাছে শিক্ষকদের ব্যাপারে যাচ্ছে অভিযোগ। শিক্ষকরা নাকি ঠিক সময় স্কুলে উপস্থিত হচ্ছেন না বা সঠিক সময় ক্লাস করাতে আসছেন না, এমনটা নালিশ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। এই সমস্ত অভিযোগ স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের কাছ থেকে সরাসরি জমা পড়েছে বলে শোনা যাচ্ছে পর্ষদের কাছে। আর তাই এই নিয়ে এবারে নয়া নিয়ম ঘোষণা করল পর্ষদ। ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনার উন্নতির জন্য শিক্ষকদের এই গাফিলতি আটকাতে তাদের বিরুদ্ধে এবার কড়া ব্যবস্থা নিল পর্ষদ। সেই বিষয়েই আজকের এই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।

আরও পড়ুন, পুজোর ছুটি মিটলেই স্কুলে স্কুলে নতুন নির্দেশ।

পর্ষদ জানাচ্ছে, প্রায়শই নাকি কোনো না কোনো অভিযোগ নিয়ে শিক্ষকরা ছুটে যাচ্ছেন তাদের কাছে। এরমধ্যে স্কুলগুলির শিক্ষাব্যবস্থা সংক্রান্ত ক্ষেত্র ছাড়াও রয়েছে বিভিন্ন ছোটখাটো অভিযোগ। ফলে এই দিনগুলিতে ক্লাস করাতে আসতে পারছেন না অনেক শিক্ষকরাই। যার কারণে বিঘ্নিত হচ্ছে ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশোনা। তাই এবারে সরাসরি ভাবে পর্ষদ জানালো যে যখন তখন যেকোন রকম অভিযোগ নিয়ে আর হাজির হওয়া যাবে না তাদের অফিসে। এ ব্যাপারে নির্দিষ্ট সময় সীমা বেঁধে দিল পর্ষদ।

নির্দেশিকা অনুসারে বলা হয়েছে যে, পর্ষদে কেউ জেনারেল সেকশনে কোন কাজে ভিজিট করতে গেলে যেতে হবে সকাল ১১ টা থেকে দুপুর ২ টোর মধ্যেই। দুপুর ২ টোর পরে কোন ভিজিটরকেই অনুমতি দেবে না রাজ্যের মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। যদিও এই সিদ্ধান্তকে বাঁকা নজরে দেখেছে শিক্ষকদের কয়েকটি সংগঠন। তবে ছাত্র-ছাত্রীদের ভবিষ্যৎ টা গুরুত্বপূর্ণ, আর শিক্ষকদের অবহেলার কারণে যাতে তা খারাপ না হয় সেজন্যই তাদের বিরুদ্ধে এরকম কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, জানিয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ।
Written by Nabadip Saha.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button