National Education Policy – এবার যারা কলেজে ভর্তি হবে তাদের আর 3 নয় 4 বছরে গ্রাজুয়েশন।
আর ৩ বছরে গ্র্যাজুয়েট নয়, ৪ বছর পড়তে হবে কলেজে, National Education Policy এর আদলে নয়া নিয়ম চালু, বিস্তারিত দেখুন।
তিন বছর পড়াশোনা করেই যারা গ্র্যাজুয়েট হবেন ভাবছিলেন, National Education Policy চালু হওয়ায় তারা এবার নিরাশ হলেন। আর ৩ বছর নয়, ৪ বছরের গ্র্যাজুয়েশন পাঠক্রম চালু করার পক্ষেই মত দিল উচ্চ শিক্ষা দপ্তর (West Bengal Higher Education Department). এবার যারা উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছেন এবং কলেজে ভর্তি হবেন, তারা আবেদন করার আগে জেনে নিন।
এতদিন পর্যন্ত ৩ বছরের Graduation শেষ করলেই স্নাতক হওয়া যেত। যেকোনো কর্মস্থলে স্নাতক চাকরিপ্রার্থী হিসেবে আবেদন করা যেত। এবার থেকে আর তা হচ্ছে না। রাজ্য সরকারের উচ্চ শিক্ষা দপ্তরের তরফে এবার থেকে রাজ্যে ৩ বছরের বদলে ৪ বছরের স্নাতক পাঠক্রম (Degree Course) চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সরকারি, সরকার পোষিত এবং সরকার সাহায্যপ্রাপ্ত সমস্ত কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে এই স্নাতক পাঠ্যক্রম চালু হতে চলেছে।
আরও পড়ুন, রাজ্যের বেকার ছেলে মেয়েদের বেকার ভাতা ও চাকরি দিচ্ছে রাজ্য সরকার।
আর উচ্চশিক্ষা দপ্তরের পক্ষ থেকে ৩ বছরের বদলে ৪ বছরের গ্র্যাজুয়েশন শুরু করার পরেই এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি জাতীয় শিক্ষানীতি (National Education Policy) মেনে রাজ্য সরকার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করল? প্রশ্ন উঠেছে তার কারণ, কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় শিক্ষানীতি (National Education Policy) প্রবর্তন করার পরে রাজ্যের তরফে উপাচার্যদের নিয়ে একটি বিশেষ কমিটি গঠন করা হয়। সেই কমিটির খোঁজ করার বিষয় ছিল ৪ বছরের স্নাতক পাঠ্যক্রম চালু করা ঠিক হবে কিনা?
জানা গিয়েছে, সেই কমিটি এর পক্ষেই মত দিয়েছে। তবে রাজ্য সরকার জাতীয় শিক্ষানীতি (National Education Policy) গ্রহণ করে এই ৪ বছরের স্নাতক পাঠ্যক্রম চালু করেনি বলেই জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। রাজ্যের শিক্ষা মন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানিয়েছেন, ৪ বছরের স্নাতক পাঠ্যক্রম চালু করার কারণ হলো, সর্বভারতীয় বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীরা সুফল পাবে। পাশাপাশি, বহু পড়ুয়া রাজ্যের শিক্ষার মান ভালো নয় মনে করে অন্য রাজ্যে গিয়ে উচ্চশিক্ষা (Higher Education) গ্রহণ করত। তাদের মনের থেকে সেই ভুল ধারণাটাও দূর হবে এবং এই রাজ্যেই ৪ বছরের স্নাতক পাঠক্রমের মাধ্যমে তারা উচ্চশিক্ষা অর্জন করতে পারবে।
কলেজে ভর্তির নিয়মঃ
তবে এক্ষুনি রাজ্যে আলাদা অভিন্ন পোর্টাল চালু করা হচ্ছে না। কেন্দ্রীয় পোর্টালে ইতিমধ্যেই মহড়া শুরু হয়েছে। তবে রাজ্যের কলেজগুলিকে আলাদা আলাদা করে ভর্তি করা হবে। রাজ্যের ৭ লক্ষ পড়ুয়ার ভবিষ্যতের কথা ভেবেই ৪ বছরের স্নাতক পাঠক্রম চালু করার কথা জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। তবে তার অর্থ এই নয় যে, রাজ্য সরকার জাতীয় শিক্ষানীতি মেনে নিয়েছে।
শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যঃ
এই প্রসঙ্গে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু টুইটারে জানান, রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তের ভুল ব্যাখ্যা করা হচ্ছে। রাজ্য সরকার ন্যাশনাল এডুকেশন পলিসি (National Education Policy) মেনে নিয়েছে এটিকে সত্যের অপলাপ বললে কম বলা হবে। একটি সম্পূর্ণ পৃথক স্টেট এডুকেশন পলিসি (State Education Policy) তৈরি করেছে রাজ্য সরকার। যেখানে সমস্ত বেস্ট প্র্যাকটিসেস নেওয়া হয়েছে। এই রাজ্য শিক্ষানীতি দ্রুত আপলোড করা হবে।
টুইটারে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু আরও জানান, রাজ্যের প্রায় ৭ লক্ষ ছাত্রছাত্রী এই ৪ বছরের ডিগ্রী কোর্স চালু না করা হলে সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতায় অংশ পেতে নিতে পারতেন না। তার ফলে বাইরের রাজ্যে গিয়ে সেই সমস্ত পড়ুয়ার পড়াশোনার প্রবণতা তৈরি হতো। যারা আর্থিকভাবে একটু অসচ্ছল তাদের যথেষ্ট সমস্যা হতো। সেই সমস্ত কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করলেই পাবেন সরকারী বিরাট সুবিধা, জানতে ক্লিক করুন।
রাজ্য সরকার যে জাতীয় শিক্ষানীতির কোন জিনিস গ্রহণ করেনি, সেটিও স্পষ্ট ভাবে উল্লেখ করে ব্রাত্য বসু টুইটারে লেখেন, জাতীয় শিক্ষানীতির বিভিন্ন জিনিস যেমন বিদ্যালয়ে ৫+৩+৩+৪ শ্রেণী চালু করা, উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কেন্দ্রীকরণের মতো নীতির বিরোধিতা আমরা করছি। আমাদের রাজ্য শিক্ষানীতি গ্রহণ করিনি। ৩ বছরের বদলে ৪ বছরের স্নাতক পাঠ্যক্রম (Degree Course Syllabus) চালু করা নিয়ে বিভ্রান্তি কাটানোর জন্যই রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এই টুইট করেছেন।
শুধু তাই নয়, সিপিআইএম এর উদ্দেশ্যে কটাক্ষ করে ব্রাত্য বসু লেখেন, ৩ বছরের ডিগ্রী কোর্স রেখে দেওয়া হলে বিগত বাম সরকারের ক্লাস ওয়ান থেকে ইংরেজি তুলে দেওয়া বা ব্রিজ কোর্স চালু করার মত, তার থেকেও বেশি ছাত্র বিরোধী সিদ্ধান্ত নেওয়া হতো। মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে বলেছেন।