রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ আন্দোলন সংক্রান্ত বিষয়ে বিশেষ নির্দেশিকা প্রকাশ করল রাজ্যের Finance (Audit) Department. সেক্ষেত্রে আগামী 20 এবং 21 তারিখের আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে যারা যারা ঐ 2 দিন ছুটি নেবেন, তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এই নিয়ে 731-F(P2) নম্বরের নির্দেশিকা প্রকাশিত হয়েছে গত 18ই ফেব্রুয়ারি, 2023 তারিখে। কি কি বলা হয়েছে এই অর্ডারে, তা জেনে নেওয়া যাক।
ডিএ আন্দোলন কি সরকারি কর্মীদের পাইয়ে দেবে বকেয়া, নাকি AICPI অনুসারে পিছিয়েই থাকবে রাজ্য!
বিশেষ কয়েকটি পরিস্থিতি ছাড়া কোন মতেই ডিএ আন্দোলনের দেওয়া ডাকের দিনে অর্থাৎ আগামী 20-21শে ফেব্রুয়ারি তারিখের আন্দোলনের দিনে নিজ সরকারি কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকা চলবে না। সেক্ষেত্রে বিশেষ ক্ষেত্র হিসেবে বলা হচ্ছে, যদি কোন কর্মচারী ঐ ডিএ আন্দোলনের দিনে হাসপাতালে ভর্তি থাকেন বা তার পরিবারিক কোন সদস্যের জন্য শোক পালন, প্রচণ্ড মাত্রায় অসুস্থতার কারণে গত 17ই ফেব্রুয়ারির আগে থেকে ছুটি নিয়ে থাকা কোন কর্মচারীদের ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে।
এছাড়াও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে যে, কোন কর্মচারী যদি Child Care Leave, Maternity Leave, Medical Leave, Earned Leave – এর জন্য ছুটির আবেদন গত 17ই ফেব্রুয়ারির আগে আবেদন করে থাকেন, তাহলে সেক্ষেত্রে সেই ছুটি মঞ্জুর করা হবে। এছাড়া যদি কেউ অনুপস্থিতি করেন তাহ্লে সরাসরি তার চাকুরী জীবন থেকে অনুপস্থিতির দিনগুলি “সার্ভিস ব্রেক” হিসেবে ধরা হবে। এছাড়া তিনি ঐ 2 দিনের বেতন থেকেও বঞ্চিত হবেন।
এছাড়া এই ডিএ আন্দোলনের কারণে যদি কেউ অনুপস্থিত থাকেন তাহলে সেক্ষেত্রে তাকে নিজ নিজ দপ্তরের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা কর্তৃক পাঠানো হবে শো-কজ নোটিশ। সেই নোটিশের সঠিক এবং যুক্তিযুক্ত জবাবদিহি করতে হবে সেই কর্মীকে। তাকে জানাতে হবে, যে কেন তার বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে না কর্তৃপক্ষ। এরপর কর্তৃপক্ষ তা খতিয়ে দেখেই সিদ্ধান্ত নেবেন।
Menstrual Leave নিয়ে সবেতন ছুটির আইন পাস, বড় পদক্ষেপ নিলো সরকার!
প্রসঙ্গত, বকেয়া ডিএ নিয়ে দীর্ঘদিন অনশন চালাচ্ছেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। গত 27শে জানুয়ারী থেকে শহীদ মিনারে অনশন চালাচ্ছিলেন কর্মীরা। এরই মাঝে গত 15ই ফেব্রুয়ারি, 2023 তারিখে রাজ্যের বাজেট পেশের সময় অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য্য জানান ডিএ বাড়ানো হবে তবে তা 3 শতাংশ পরিমানেই।
অর্থাৎ সেই ঘোষণায় বলা হয়েছে, রাজ্য সরকারি কর্মচারী দের ডিএ মার্চ মাস থেকে বেড়ে 6 শতাংশ হবে। অথচ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা যেখানে 38 শতাংশ ডিএ পান(যা খুব শীগ্রই 42 শতাংশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে)। অন্যদিকে সরকারকে পাল্টা জবাব দিয়েছেন রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠন। কোনো পরিস্থিতিতেই তারা ভিক্ষা গ্রহণ করবেন না বলে জানিয়ে দিয়েছে সরকারি কর্মচারীরা।
তারা জানিয়ে দিয়েছেন যে, কেন্দ্রীয় হারে ডিএ না পেলে এই ডিএ আন্দোলন চলবে এবং আন্দোলন তীব্রতর হবে আর সেই উদ্দেশ্যেই আগামী সোমবার এবং মঙ্গলবার কর্মবিরতির ডাক দিয়েছেন কর্মীরা। সেই প্রসঙ্গে সরকারের কড়া হুশিয়ারি কর্মীদের যে ওই দুদিন সরকারি কর্মচারীদের বাধ্যতামূলকভাবে অফিসে আসতেই হবে। যে সব কর্মচারী 17 ই ফেব্রুয়ারি ছুটি নিয়েছিলেন, তাদের 20 ফেব্রুয়ারি অফিসে রিপোর্ট করতেই হবে।
বকেয়া ডিএ ইস্যুতে, জোর পেল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারী কর্মীরা, সুফল মিলছে।
এই বিষয়ে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের সংগঠন কনফেডারেশন অফ স্টেট গভর্নমেন্ট এমপ্লয়িজের সাধারণ সম্পাদক মলয় মুখোপাধ্যায় বলেন, “বঞ্চনা গগনচুম্বী হয়ে গিয়েছে। মাত্র তিন শতাংশ ডিএ দিয়ে হাত গুটিয়ে নিতে চাইছে রাজ্য সরকার। 21-22 দিন ধরে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা আন্দোলন করে যাচ্ছেন। সরকারের পক্ষে থেকে তাঁদের ডেকে কোনরকম আলোচনাও করা হয়নি। এই ধরনের রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসকে ধিক্কার জানাচ্ছি”।
বিশেষ তথ্যঃ- জার্মানিতে শ্রমিকরা মুদ্রাস্ফীতির কারণে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে কর্তৃপক্ষকে চাপ দেওয়ার জন্য কর্মবিরতি বা ওয়াক আউট করার কারণে গতকালই অর্থাৎ শুক্রবার জার্মান বিমানবন্দরে। সেখান থেকে হাজার হাজার ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। ফ্রাঙ্কফুর্ট, মিউনিখ এবং হামবার্গ সহ 7টি জার্মান বিমানবন্দরে ধর্মঘট প্রায় 300,000 যাত্রীকে প্রভাবিত করে এই কর্ম বিরতি। এয়ারলাইনগুলিকে 2,300টিরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করতে বাধ্য করেছিল এই কর্মবিরতি। বকেয়া ডিএ আন্দোলন সংক্রান্ত বিষয়ে আরও জানতে দেখতে থাকুন। ধন্যবাদ।
Written by Mukta Barai.