রাজ্যের অভাবী পড়ুয়াদের পড়াশোনার খরচ তথা পড়াশোনায় সাহায্য করতে একাধিক সরকারি ও প্রাইভেট উদ্যোগ রয়েছে। এমনই একটা অভিনব উদ্যোগ হলো Book Bank Scheme তথা বুক ব্যাংক স্কীম। এই প্রকল্প কাদের জন্য। কি কি সুবিধা পাবেন? জেনে নিন।
Swami Vivekananda Book Bank Scheme
আমাদের দেশে দরিদ্র এবং দুস্থ পড়ুয়াদের সংখ্যাই বেশি। অনেকেই কষ্ট করে লেখাপড়া করে। পড়াশোনার খরচ চালানোর মতো টাকা থাকে না তাদের হাতে। প্রয়োজনীয় বই পত্র পায় না তারা। ফলে অনেককেই পুরনো বই জোগাড় করে পড়তে হয়। আবার অনেকে পড়াশোনার খরচ চালানো ও বই কিনতে না পারায় ঠিকভাবে করতে পারেনা পড়াশোনা। এই পরিস্থিতিতে বহু ছাত্র ছাত্রীর লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যায়।
যদিও সরকারের তরফ থেকে একাধিক স্কলারশিপ এবং স্কিম চালু করা হয়েছে শিক্ষার্থীদের আর্থিক সাহায্যার্থে, কিন্তু সেগুলির সুবিধা কি সকলে পায়? একদমই না। তাই এবার সরকারের তরফ থেকে চালু করা হয়েছে এক বিশেষ কর্মসূচি। এখন থেকে পড়ুয়াদের আর টাকা খরচ করে কিনতে হবে না বই পত্র। যা বই লাগুক না কেন তারা সংগ্রহ করতে পারবে সরাসরি তাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে এবং এই সুবিধা তাদের দেওয়া হবে সম্পূর্ণ বিনামূল্যে। জানুন সরকারের নতুন এই পদক্ষেপ সম্পর্কে।
এই পদক্ষেপ এর নাম হলো বুক ব্যাংক (Book Bank Scheme). ২০১৪ সাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের এক কলেজে প্রথম চালু করা হয় এই বুক ব্যাংক (Book Bank Scheme). এর মাধ্যমে সেখানকার ছাত্র-ছাত্রীরা বিনা খরচায় পেয়ে থাকেন সমস্ত বই পত্রের সুবিধা। প্রতিটি স্কুল বা কলেজে লাইব্রেরী তো থাকেই। কিন্তু এই বুক ব্যাংক ঠিক লাইব্রেরীর মত নয়।
Book Bank Scheme Benefits
এখানে সব ধরনের পাঠ্য বই থেকে শুরু করে রেফারেন্স বই এবং অন্যান্য সমস্ত ধরনের বইয়েরই সংগ্রহ থাকে। যার ফলে শিক্ষার্থীরা তাদের প্রয়োজনমতো যে কোন বই নিয়ে পড়াশোনা করতে পারেন সহজেই। তাদেরকে আর টাকা খরচ করে কিনতে হয় না সে সমস্ত বই। এই বুক ব্যাংকের (Book Bank Scheme) চাহিদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে দিনকে দিন। বিশেষ করে করোনা পরবর্তী সময় থেকে এটি আরো বেশি পরিচিত হয়ে ওঠে।
পশ্চিমবঙ্গের ঠাকুরপুকুর বিবেকানন্দ কলেজে চালু করা হয় এই বুক ব্যাংক (Swami Vivekananda Book Bank Scheme). প্রধানত কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং সমস্ত ছাত্র ছাত্রীদের যৌথ উদ্যোগে গড়ে ওঠে এই বুক ব্যাংক। সকলের তরফ থেকেই করা হয় অর্থ সাহায্য। যেমন শিক্ষক শিক্ষিকা থেকে শুরু করে শিক্ষা কর্মী, এবং নতুন ছাত্রছাত্রী সকলেরই অবদান রয়েছে এতে। আবার প্রাক্তন ছাত্রছাত্রীরা তাদের পুরনো বইপত্র প্রদান করেছেন এই বুক ব্যাংকে।
বর্তমানে এই কলেজের বুক ব্যাংকে মোট বইয়ের সংখ্যা হল ৩০০০। আগামী দিনে এই ভান্ডার আরো বাড়বে বলে জানিয়েছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। এই কর্মসূচি ফলে উপকৃত হচ্ছেন ওই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার শিক্ষার্থী। বিবেকানন্দ কলেজের এক ছাত্রী নেহা বিশ্বাস বলেন, “বহু পড়ুয়া রয়েছেন যাঁদের বাড়িতে পুরনো বই পড়ে থেকে নষ্ট হয়ে যায়। আবার অনেকেই বইয়ের অভাবে পড়াশোনা করতে পারেন না।
তাই তাঁদের জন্যই এই ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। চ্যালেঞ্জটা কঠিন হলেও কলেজ কর্তৃপক্ষ থেকে শুরু করে প্রাক্তনীরা এই ‘বুক ব্যাঙ্ক’ এ (Book Bank Scheme) বই ও অর্থ দিয়ে সাহায্য করেছেন, যা আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া পড়ুয়াদের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে বিশেষ ভাবে সাহায্য করছে।”
মধ্যবিত্তের কথা ভেবে মাত্র 5 টাকায় পাবেন মোবাইলে ১ বছর ভ্যালিডিটি। চলবে সারা বছর।
কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নবকিশোর চন্দ বলেন, “আমাদের কলেজে প্রথম বার পড়তে আসা পড়ুয়াদের সংখ্যা অনেক বেশি। বইয়ের অভাবে অনেকেই পড়াশোনা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছিলেন, তাই ছাত্র-ছাত্রীদের কলেজমুখী করতে এই উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। করোনা মহামারীর পর এই উদ্যোগ যথেষ্ট সাফল্য লাভ করেছে।”
Written by Nabadip Saha.