পশ্চিমবঙ্গের দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়াদের জন্য ট্যাব দিচ্ছে সরকার, কবে পাবেন জেনে নিন।

করোনা পরিস্থিতিকে চালু হয়েছিল অনলাইনে পড়াশোনা। স্কুল, কলেজ থেকে শুরু করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইনে ছাত্রছাত্রীদের নিয়মিত ক্লাস (Online Class) নেওয়ার বন্দোবস্ত করেছিল। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে বেসরকারি স্কুল গুলির পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে এই নিয়ে কোনো সমস্যা তৈরি হয়নি। তার কারণ, বেসরকারি স্কুলগুলিতে মূলত আর্থিকভাবে প্রতিষ্ঠিত পরিবারের ছাত্র-ছাত্রীদেরকেই অধিকাংশ ক্ষেত্রে ভর্তি হতে দেখা যায়। অন্য দিকে রাজ্য সরকারি স্কুল এবং সরকার পোষিত স্কুল গুলিতে রাজ্যের সমস্ত স্তরের ছাত্র-ছাত্রীরা পড়াশোনা করে।

পশ্চিমবঙ্গের সকল পড়ুয়াদের জন্য দারুণ সুসংবাদ ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।

যেখানে আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া, মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও গরীব পরিবারের পড়ুয়ারাও সরকারি স্কুল এবং সরকারি পোষিত স্কুলগুলিতে পড়াশোনার সুযোগ পায়। কিন্তু ডিজিটাল প্রযুক্তিতে অনলাইনে পড়াশোনার জন্য তার মধ্যে বহু পড়ুয়ার হাতেই স্মার্টফোন (Smartphone) নেই‌। প্রত‍্যন্ত গ্রামাঞ্চলে গরিব পরিবারের পড়ুয়াদের হাতে স্মার্টফোন না থাকার কারণে তারা অনলাইনে কোনো ভাবেই পড়াশোনা করতে পারছে না।

আর সেই দিকে নজর দিয়েই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পড়াশোনায় সুবিধা দেওয়ার লক্ষ্যে ট্যাব (Tab For HS Students) কেনার জন্য 10000 টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন। বেশ কয়েক বছর ধরেই উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীরা ট্যাব কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা পাচ্ছেন। সাধারণত উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার টেস্টের আগেই এই 10 হাজার টাকা দেওয়া হয়। এবার Tab কেনার জন্য ১০০০০ টাকা আগে দেওয়ার দাবি উঠেছে।

শিক্ষামহলের একাংশের অভিযোগ, Tab কেনার জন্য এই ১০ হাজার টাকা যে সময়ে দেওয়া হচ্ছে, তাতে পরীক্ষার্থীদের কাজে লাগছে না। তাই বেশ কিছুটা সময় আগে থেকেই যদি ট্যাব কেনার জন্য এই টাকা দেওয়া হয়, তাহলে তারা পরীক্ষার প্রস্তুতিতে কাজে লাগাতে পারে। প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা (HS Exam 2024) প্রায় এক মাস এগিয়ে আনা হয়েছে। এর মধ্যেই গরমের ছুটির কারণে প্রায় দেড় মাস স্কুলগুলিতে পঠন-পাঠন বন্ধ ছিল এর ফলে সিলেবাস সম্পূর্ণ করা যায়নি।

আর সেই দিকে নজর দিয়ে রাজ্য শিক্ষা দপ্তরের তরফে সমস্ত স্কুল কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সিলেবাস পূরণ করতে। কিন্তু পূজোর ছুটির আগে হাতে মাত্র কম বেশি ৪ মাস সময় রয়েছে। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বক্তব্য অনুযায়ী, এই সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ সিলেবাস পূরণ করা কোনো মতেই সম্ভব নয় এবং এই কাজ করা হলেও পড়ুয়াদের এই নিয়ে সমস্যায় পরতে হবে। তাই আগে যদি ট্যাব কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা পড়ুয়াদের দিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে তারা পরীক্ষার জন্য আগের থেকে প্রস্তুতি নিতে পারবে।

সেক্ষেত্রে বাড়িতে বসেও অনলাইনে বিভিন্নভাবে পড়াশোনার প্রস্তুতি চালিয়ে যেতে পারবে। ২০২৪ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ১৬ই ফেব্রুয়ারি থেকে। গত বছর সেপ্টেম্বর থেকে নভেম্বর মাসের মধ্যে ট্যাব কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা উচ্চ মাধ্যমিক পড়ুয়াদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয়েছিল। এবার পড়ুয়া থেকে শিক্ষক সকলের দাবি, TAB কেনার এই ১০০০০ টাকা উচ্চ মাধ্যমিক টেস্ট এর অন্তত ২ মাস আগে দিয়ে দেওয়া হোক।

পাশাপাশি, আবার শিক্ষক মহলের একাংশের বক্তব্য, সরাসরি ট্যাব কিনে সরকার পড়ুয়াদের দেওয়া হোক সরকারের তরফে। কারণ মাঝে মধ্যেই এই ট্যাব কেনার টাকা নিয়ে ভুয়ো বিল দেখানোর অভিযোগ উঠেছিল। এই প্রসঙ্গে পশ্চিমবঙ্গ প্রধান শিক্ষক সমিতির তরফে বলা হয়েছে, যদি সরকার সরাসরি ট্যাব কিনে দেয় সেটাই ভালো হবে। আর খুব শীঘ্রই পড়ুয়াদের এই TAB কেনার জন্য ১০ হাজার টাকা দেওয়া উচিত।

পশ্চিমবঙ্গে শুরু হয়ে গেল কলেজে ভর্তির প্রক্রিয়া, কিভাবে চলবে এই ভর্তি,

যেহেতু ২০২৪ সালের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা অনেকটাই এগিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তাই সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে পরীক্ষার্থীদের টেস্টের বেশ কিছুটা সময় আগেই ট‍্যাব দেওয়ার দাবি উঠেছে। এবারে অনেকে মনে করতে পারেন যে পরীক্ষা এগিয়ে আনার কি প্রয়োজন ছিল? কিন্তু এই নিয়ে কোন সঠিক কারণ না জানানো হলেও অনেকেই ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের জন্যই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করছেন। কারণ সেই সময়ে সকল বিদ্যালয় গুলিকে ভোট গ্রহণ কেন্দ্র হিসাবে নিয়ে নেওয়া হয়।

সম্পাদক

Leave a Comment