সম্প্রতি মিড ডে মিল (Mid Day Meal) নিয়ে তোলপাড় রাজ্যে। Mid Day Meal বরাদ্দ বৃদ্ধি, খাবারের মান, খাবারে বিষক্রিয়া সহ একাদিক ইস্যু নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। আর সব কিছুর উপরে শিক্ষকদের উপর চাপ বাড়ছে। তাই, রাজ্যের স্কুলে দেওয়া পড়ুয়াদের মিড ডে মিলের খাবারের পরিচালন করার দায়িত্ব নিয়ে বিরাট সিদ্ধান্ত নিলো রাজ্যের প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন। তবে কিভাবে চলবে এই সকল বিদ্যালয়গুলি মিড ডে মিল, তা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনায় জেনে নেওয়া যাক।
Mid Day Meal Scheme:
প্রধান শিক্ষকদের এই সিদ্ধান্তের ফলে রাজ্যে কিভাবে চলবে মিড ডে মিল, প্রশ্ন চারিদিকে।
মিড ডে মিল তথা Mid Day Meal হল একটি স্বাস্থ্যকর তাজা রান্না করা মধ্যাহ্নভোজ যা ভারতে সরকারি এবং সরকারি সাহায্যপ্রাপ্ত স্কুলে শিশুদের পরিবেশন করা হয়। 28 নভেম্বর 2001 এ, ভারতের সুপ্রিম কোর্ট একটি আদেশ দিয়েছিল যে, “আমরা সমস্ত রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে নির্দেশ দিচ্ছি যে প্রত্যেকটি সরকারী এবং সরকারী সহায়তাপ্রাপ্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিটি শিশুকে একটি প্রস্তুত মধ্যাহ্নভোজ প্রদান করে মিড ডে মিল স্কিম বাস্তবায়ন করতে। “
মিড ডে মিল স্কিমের লক্ষ্য হল:
শ্রেণীকক্ষের পড়ুয়াদের ক্ষুধা থেকে নিবৃত্তি দেওয়া। অতিরিক্ত পুষ্টির যোগান দেওয়া। স্কুলে স্কুলে ছাত্র ভর্তির সংখ্যা বাড়ানো। স্কুলে পড়ুয়াদের উপস্থিতি বৃদ্ধি করা যা পড়ুয়াদের মধ্যে শিক্ষার প্রসার করবে। প্রত্যেক জাতির মধ্যে সামাজিকীকরণ উন্নত করা। রাঁধুনীদের নিয়োগ করার মাধ্যমে কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করা।
তবে এবারে কি এই প্রকল্প বন্ধ হতে চলেছে?
সম্প্রতি গত 15ই জানুয়ারি, 2023 তারিখে রাজ্যের এডভান্সড সোসাইটি ফর হেডমাস্টার্স এন্ড হেডমিস্ট্রেস সোসাইটি নামক এক বৃহৎ সংগঠনের তরফ থেকে একটি আবেদন জানানো হয়েছে রাজ্যের প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটারি মহাশয়কে। সেখানে স্কুলের প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকারা Mid Day Meal এর দায়িত্ব থেকে সরে আসার জন্য আর্জি জানিয়েছেন।
তাদের বক্তব্য এমন যে, বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমের থেকে পাওয়া খবর অনুসারে জানতে পেরেছেন যে, মালদা জেলার চাঁচল-II ব্লকের একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত এক প্রাথমিক শিক্ষককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তার কারণ এই মিড ডে মিল। সেক্ষেত্রে জানা গেছে যে, ঐ খাবারের মধ্যে ছিল টিকটিকি, ইঁদুর। যদিও এই সকল জিনিস সকলের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে একাধিক ইস্যুতে প্রধানত শিক্ষকদের কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে। আর ক্লাস সামলে কতটাই বা নজর দিতে পারেন শিক্ষকেরা। এমনিতেই সারা রাজ্য জুড়ে বিপুল সংখ্যক শিক্ষক শূন্যতায় ভুগছে রাজ্যের স্কুল গুলি।
আরও পড়ুন, “বকেয়া ডিএ নিয়ে চরম ভুল করেছে নবান্ন” ডিএ মামলায় নবান্ন কে কড়া নির্দেশ সুপ্রীম কোর্টের।
তবে বর্তমানে প্রত্যেক বিদ্যালয়ে রাখা হয় Mid Day Meal টেস্ট রেজিস্ট্রার। সেখানে খাদ্যের স্বাদ এবং গুণমান যাচাই করে সেই খাতায় রীতিমতো শিক্ষক, শিক্ষিকা এবং রাঁধুনীদের সই করতে হয়। এই রকম পরিস্থিতিতে তোলপাড় রাজ্যের বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম। তাদের বক্তব্য, মিড ডে মিল সহ আরো 17 টি প্রকল্পের সাথে যুক্ত থাকতে হয় তাদের। এছাড়া রাজ্যের রুরাল এলাকার স্কুল গুলিতে শিক্ষক শিক্ষিকার ঘাটতি থাকার ফলে শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে চিন্তিত তারা।
মোবাইল রিচার্জের দারুণ অফার, মাসে 70 টাকার খরচে পান অফুরন্ত ইন্টারনেট আর কলিং!
বিদ্যালয়ের শিক্ষক শিক্ষিকাদের প্রধান উদ্দেশ্য হচ্ছে পড়ুয়াদের পঠন পাঠনে নজর দেওয়া। তবে শিক্ষা বহির্ভুত কাজের সাথে যুক্ত থাকার ফলে খামতি থেকে যাচ্ছে অন্য ক্ষেত্রে। শিক্ষকদের একাংশের মত বর্তমানে শিক্ষা ব্যাবস্থায় উপলখ্য পুরন করতে গিয়ে ক্রমে ক্রমে লক্ষ্যের দিশা হারিয়ে যাচ্ছে। এই বিষয় নিয়ে আপনি আপনার মতামত জানাতে পারেন কমেন্ট বক্সে। শিক্ষকদের দাবী কি মানা হবে? আর যদি মানা হয় তবে, এই মিড ডে মিল প্রকল্প এবারে কিভাবে চলবে সেটাই এখন দেখার। ধন্যবাদ।
Written by Mukta Barai.
শুধু মিড-ডে মিল নয়,সর্বপ্রকার শিক্ষাবহির্ভুত কাজ(যার মধ্যে নির্বাচনের কাজ,ভোটার লিস্ট তৈরী) থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক।