Primary Teacher – B.Ed থাকলেও প্রাথমিক শিক্ষক বৈধ। আদালতের নতুন রাজ্যে স্বস্তিতে শিক্ষক ও টেট প্রার্থীরা।

প্রাথমিকে চাকরি যাবে না Primary Teacher পদে নিযুক্ত B.Ed শিক্ষকদের। হাইকোর্টের বিরাট রায় ঘোষণায় হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন হাজার হাজার প্রাথমিক শিক্ষক তথা Primary TET প্রার্থীরা। আদালতের পর্যবেক্ষণ, সিদ্ধান্ত, শর্তাবলী বিস্তারিত জেনে নিন।

WBBPE B.Ed Primary Teacher

2020 সালের ১৬৫০০ প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের যে পরীক্ষা হয়েছিল, তা নিয়ে মামলা করা হয়েছিল হাইকোর্টে আগেই। এই সালের পরীক্ষার বিরুদ্ধে পরীক্ষার্থীরা এমনটা দাবি জানিয়েছিল যে যোগ্য প্রশিক্ষণ ছাড়াই নাকি এই বছরের ১০০০০ পরীক্ষার্থীকে দুর্নীতির দ্বারা চাকরি পাইয়ে দেওয়া হয়। অন্যদিকে যারা খেটে কষ্ট করে পরীক্ষা দিয়েছেন এবং সঠিকভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত তাদের নামই তোলা হয়নি তালিকায়।

বহুদিন ধরেই B.Ed Primary Teacher কেসটি নিয়ে জল ঘোলা চলছিল হাইকোর্টে। আর এবার এই মামলারই শুনানি দিয়ে এক সাড়ির শিক্ষক শিক্ষিকাকে দোষ থেকে মুক্তি প্রদান করল সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের ডিভিশন বেঞ্চ। সিদ্ধান্ত নেওয়া হল এই সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বাতিল করা হবে না কারণ তারা সকলে নির্দোষ।
২০২০ সালে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ মারফত প্রকাশিত হয়েছিল ১৬৫০০ প্রাথমিক শিক্ষক-শিক্ষিকা নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি।

এই বছরের Primary Teacher নিয়োগে বলা হয়েছিল যে ডিএড ছাড়াও বিএড উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রীরা এই পরীক্ষায় বসতে পারবেন। কিন্তু তাদেরকে অবশ্যই ছয় মাসের একটি ব্রিজ কোর্স করে থাকতে হবে। এমনটা নিয়ম করেছিল NCTE। অন্যদিকে সেই বছরেরই কিছু পরীক্ষার্থীদের দাবি যে ২০১৫ সালের পর থেকে নাকি গত ৯ বছর যাবত রাজ্যে কোন ব্রিজ কোর্স করানোই হয়নি।

অথচ বছর ঘুরতে না ঘুরতেই চাকরি পেয়ে গেছেন সেই বছরের ১০০০০ পরীক্ষার্থী। কিভাবে সম্ভব হল এমনটা। এই নিয়ে মামলা করা হয়েছিল হাইকোর্টে এবং সেই মামলার রেশ চলছে এখনও পর্যন্ত।
কিন্তু এবার সেই মামলারই পরিপ্রেক্ষিতে নতুন নির্দেশিকা জারি করল সুপ্রিম কোর্ট। বলা হলো যেসমস্ত বিএড উত্তীর্ণ ছাত্রছাত্রীরা প্রাথমিকের পরীক্ষায় বসেছিলেন তাদের সকলকে সরকারের পক্ষ থেকে বিশেষ ব্যবস্থা নিয়ে ডিএড কোর্স করিয়ে দেওয়া হবে।

আর WBBPE প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফ থেকেই আয়োজন করা হবে এই কোর্স করানোর ব্যবস্থা। তারা যদি সেই কোর্স করতে ইচ্ছুক থাকেন তবে Primary Teacher পদে চাকরি চালিয়ে যেতে পারবেন তারা। অন্যথায় বরখাস্ত করা হবে তাদের সেই চাকরি থেকে। কিন্তু সেই সঙ্গে কোর্টের তরফে সকলকে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয় যে এরপর থেকে আর কোন বিএড উত্তীর্ণ ছাত্র-ছাত্রী যদি ডিএড কোর্স না করে থাকেন তাকে অনুমতি দেওয়া হবে না প্রাথমিকের পরীক্ষায় বসার।

কাদের চাকরি থাকবে?

সুপ্রিম কোর্টের এমন রায় ঘোষণার মাধ্যমে আশ্বস্ত হন অনেক সংখ্যক Primary Teacher পরীক্ষার্থী। চাকরি যাবার ভয় থেকে মুক্ত হন তারা।
সর্বোচ্চ আদালত মারফত আরো জানানো হয়েছে যে বিএড প্রশিক্ষিতরা কোনরকম বিশেষ ছাড় পাবেন না এক্ষেত্রে। যদি ডিএড না করা থাকে তাদেরকে অযোগ্য বলেই বিবেচনা করা হবে। তবে কোন ব্যক্তি যদি একই সঙ্গে বিএড এবং ডিএড দুই প্রশিক্ষনে নিয়ে থাকেন তারা অবশ্যই আগের মতই চাকরি করতে পারবেন এক্ষেত্রে।

West Bengal DElEd Admission 2023 (ডিএলএড ভর্তি)

কাদের ভয় কাটছে না?

তবে সকলেই যে এই ডিএড কোর্স নতুন ভাবে করার সুবিধা পাবেন এমনটা বলা হয়নি কোর্টের নির্দেশিকায়। সরকার নিয়ম করেছে কেবলমাত্র ২০২৩ থেকে ২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রাথমিকের শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরই এই বিশেষ কোর্স করিয়ে নেওয়া হবে যদি তাদের করা না থাকে। ফলে সুপ্রিম কোর্টের এই রায় ঘোষণার পর আতঙ্কে ভুগছেন অনেক Primary Teacher ই।

আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গের কারেন্ট বিল নিয়ে চিন্তার অবসান। কমে গেল খরচ।

কারণ ২০২০ সালে প্রায় ৮০ শতাংশ পরীক্ষার্থী বিএড কোর্স সার্টিফিকেট দেখিয়ে চাকরি পেয়েছিলেন। তাই কোর্টের নির্দেশে এবারে সকলের আশঙ্কা একটাই যে তাদের হয়তো চাকরি যেতে চলেছে এবার।
রাজ্য স্কুল শিক্ষা দপ্তর প্রতিটি জেলার প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতিকে চিঠি দিয়েছে ২০২৩ থেকে ২৫ শিক্ষাবর্ষের সকল কর্মরত শিক্ষক শিক্ষিকাদের তালিকা প্রস্তুত করার জন্য। সেই তালিকা স্কুল শিক্ষা দপ্তরের পৌঁছলেই তারা ব্যবস্থা নেবে সেই সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের নতুনভাবে ডিএড কোর্স করিয়ে নেওয়ার।

আরও পড়ুন, সোনা কেনার দারুন সুযোগ। আবার দাম কমলো। কলকাতায় আজ সোনার দাম

আর তারপরে সেই কোর্স পাস করলেই Primary Teacher বা কর্মরত শিক্ষকেরা শিক্ষকতা চালিয়ে যেতে পারবেন তাদের চাকরি। ইতিমধ্যেই তালিকা প্রস্তুত করার কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে, এমনটা খবর মিলেছে সূত্র মারফত। ফলে এখন রাজ্যের একাংশ শিক্ষক-শিক্ষিকা এই কথা ভেবে আশাবাদী হতে পেরেছেন যে তারা টিকে যেতে পারছেন নিজেদের চাকরিতে।
Written by Nabadip Saha.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button