পশ্চিমবঙ্গের প্রাথমিক শিক্ষক দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার চূড়ান্ত রায় দিলো আদালত। মামলার রায় ঘোষণা বা Primary TET Judgement প্রকাশিত হতেই গ্রেফতার শুরু হল শিক্ষকদের। এতদিন পর্যন্ত টাকার বিনিময়ে যাদের কাছ থেকে চাকরিতে নিয়োগ পেয়েছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে সিবিআই, ইডির তরফে তদন্ত চালিয়ে পদক্ষেপের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল।
WBBPE Primary TET Judgement
এই মামলায় এর মধ্যেই প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে প্রাক্তন আমলা, একাধিক হেভিওয়েট রাজনৈতিক নেতা প্রায় বছর খানেক ধরে জেলবন্দি। এনাদের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে চাকরি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তবে এবার যারা টাকার বিনিময়ে চাকরি নিয়েছেন, সেই সমস্ত শিক্ষকেরাও যে দোষী, সেই বিষয়টি স্পষ্ট করে দিয়েছে আদালত। আর সেই নিয়েই নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলায় বড়সড় পদক্ষেপ আদালতের।
ঘুষ নেওয়া ও দেওয়া দুটোই অপরাধ
ঘুষ নিয়ে চাকরি দেওয়া যেমন অপরাধ, ঠিক ঘুষ নিয়ে চাকরি নেওয়াটাও সমান অপরাধ হিসেবেই গণ্য করা হয়। আর এবার ঘুষ দিয়ে চাকরি নিয়েছেন এই অভিযোগে ৪ জন শিক্ষককে জেলে পাঠিয়ে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এর তরফে প্রাথমিক শিক্ষক মামলায় আদালতে চার্জশিট (Primary TET Judgement Case Chargesheet Filed by CBI) পেশ করা হয়।
সেই চার্জশিটে ঘুষ দিয়ে চাকরি নিয়েছেন বলে ৪ জন শিক্ষককে অভিযুক্ত হিসেবে দেখানো হয়। এই শিক্ষকেরা হলেন জাকির শেখ, সাইগার হোসেন, সীমার হোসেন এবং সৌগত মন্ডল। এরা সকলেই মুর্শিদাবাদ জেলার বাসিন্দা। হাইকোর্টের পক্ষ থেকে বিচারপতি প্রশ্ন তোলেন, এরাই টাকার বিনিময়ে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, কুন্তল ঘোষদের কাছ থেকে চাকরি কেনার জন্য গিয়েছিলেন। যাদের জন্য এত মানুষ আজ ভুগছে। তবে প্রশ্ন উঠছে, শুধু কি এই চার জন্য? নাকি সংখ্যাটা আরও অনেক বেশি? তাহলে কি সবার ক্ষেত্রেই একই নির্দেশ জারি হবে?
এরপরই ২১ আগস্ট পর্যন্ত বিচার বিভাগীয় হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক (Primary TET Judgement). ফলে শিক্ষকদের মধ্যেও একটা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যসমস্ত প্রাইমারী টেট শিক্ষক যারা টাকার বিনিময়ে চাকরি নিয়েছেন, সেই সমস্ত শিক্ষকরা এবার দোষী সাব্যস্ত হতে চলেছেন। সেই বিষয়টি আদালতের এই নির্দেশ থেকে স্পষ্ট হচ্ছে। সামনের দিনে এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে। অভিযুক্তদের আইনজীবির উদ্দেশ্যে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, আপনার মক্কেলদের কাছে কি পার্থ আর কুন্তল গিয়েছিল?
আপনার মক্কেলরাই পার্থ, কুন্তলদের কাছে গিয়ে টাকার বিনিময়ে চাকরি নিয়েছে। এরাই সেই ব্যক্তি যাদের জন্য এত মানুষ ভুগছে। আর এরপরেই তাদের জেল হেফাজতের (Teachers Jail Custody) নির্দেশ দেন বিচারক। এই প্রসঙ্গে বিজেপির তরফে বলা হচ্ছে, ৪ জন শিক্ষককে জেলের যে নির্দেশ দিয়েছেন বিচারপতি, সেই নির্দেশ যুক্তিপূর্ণ। দুর্নীতির মূলছেদ করতে হলে এই সংখ্যা আরো বাড়বে।
শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রাজ্য সরকারের বড় পরাজয়, বহাল থাকল অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের রায়।
Primary TET Judgement এর পর শিক্ষকদের এই জেলযাত্রা নিয়ে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, বাংলায় ২ বছরের মধ্যে ২৫ টা কেসের তদন্ত করছে সিবিআই। কোনোটারই এখনো পর্যন্ত সুরাহা হয়নি। সিবিআই আর ইডির তদন্তে বিচারপতিরা হতাশ, আমরাও হতাশ। তদন্ত কিছুই হচ্ছে না। শুধুমাত্র মিডিয়া ট্রায়াল চলছে। আমরাও চাই, দোষীরা শাস্তি পাক, নির্দোষদের মুক্তি দেওয়া হোক।
এতো লোকের জেলে জায়গা হবে? নাকি নতূন জেল তৈরী হবে?
কোনো জেল তৈরি হবে না। শুধু এক দিকে জেলে ঢোকানো হবে আর অন্য দিকে বের করে দেওয়া হবে।
ঘুষখোরেরা যদি জেলে যায় তাহলে জেলে আর জায়গা থাকবে না ।
১) নিযম বহির্ভূত উপায়ে চাকরি পাওয়া শিক্ষকদের চাকরি বাতিল হলে ওই শূন্যপদগুলো ওই বছরের তালিকা থেকে যোগ্যপ্রার্থীদের দেওয়া উচিৎ ৷ দেখতে হবে তাতেও যেন দূর্ণীতি না হয় ৷
২) ঘুষ গ্রহনকারী ও ঘুষপ্রদানকারী একই জেলে থাকলে সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায় ৷
ঝন্টু
ঘুস আমাদের দেশের ক্ষমতাবানদের একটি মডেল ও অঘোষিত অধিকার বলে মনে করেন।