পুলিশের চাকরিতে (Constable Recruitment) সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়োগ করার প্রথা ইতিমধ্যেই শুরু করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি ঘোষণা করেছিলেন যদি নির্দিষ্ট যোগ্যতা থাকে তাহলে যে কোন সিভিক ভলেন্টিয়ার (Civic Volunteer Recruitment) কে রাজ্য পুলিশের কনস্টেবল পদে নিয়োগ করা হতে পারে। সেই অনুযায়ী অন্যান্য সাধারণ ছেলে-মেয়েদের পাশাপাশি সিভিক ভলান্টিয়াররাও এখন পরীক্ষা দিতে পারেন পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি পাওয়ার জন্য। যেমনভাবে সংরক্ষিত এবং প্রতিবন্ধী শ্রেণীর প্রার্থীদের জন্য আসন সংখ্যা নির্দিষ্ট থাকে চাকরিতে ঠিক তেমনভাবে সিভিক ভলেন্টিয়ার দের জন্যও মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে চালু হয়েছে পুলিশের চাকরিতে নির্দিষ্ট আসন সংখ্যার ব্যবস্থা।
West Bengal Constable Recruitment 2023
কিন্তু এবার এই আসন সংখ্যার পরিমাণ আরো বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশ প্রশাসন (Constable Recruitment). এই মর্মে একটি প্রস্তাবও জমা দেওয়া হয়েছে তাদের তরফ থেকে রাজ্যের মন্ত্রিসভার কাছে। তবে শুধু আসন সংখ্যা বাড়ানোর জন্যই নয়, সেই সঙ্গে বয়সের উর্ধ্বসীমা বৃদ্ধি করার জন্যও আর্জি জানিয়েছে রাজ্য পুলিশ। এ ব্যাপারে মন্ত্রিসভা একটি বৈঠক করবে বলে স্থির করেছে। আর সেই বৈঠকেই বিচার করে যদি দেখা যায় রাজ্য পুলিশের এই প্রস্তাব বৈধ তাহলে তা কার্যকরী করা হবে, এমনটা জানিয়েছেন শীর্ষ মহলের এক আধিকারিক।
বর্তমানে চাকরির বাজার খারাপ হওয়ার দরুন অনেক উচ্চ শিক্ষিত এবং দক্ষ প্রার্থীকেও নিম্ন স্তরে কাজ করতে হয়। রাজ্য পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে, রাজ্যে এমন বহু সিভিক ভলেন্টিয়ার কর্মী আছে যাদের পুলিশের চাকরিতে (Constable Recruitment) নিয়োগ পাওয়া কর্মীদের থেকে দক্ষতা অনেক বেশি। কিন্তু সুযোগ না পাওয়ার কারণে তারা বর্তমানে সিভিক ভলেন্টিয়ারের কাজ করছেন। যদিও রাজ্য সরকারের তরফে সিভিক ভলেন্টিয়ারদের কনস্টেবল (Constable Recruitment) হিসেবে নিয়োগ করার নিয়ম লাগু করার পর খানিকটা উপকৃত হন উপযুক্ত ভলেন্টিয়ার কর্মীরা ।
কিভাবে নিয়োগ হবে?
তবুও এখনো পর্যন্ত সকলকে সমানভাবে সুযোগ দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পুলিশকর্তারা। তাই তাদের আর্জি যদি রাজ্য সরকার আসন সংখ্যা আরো বাড়ায় এবং সেই সঙ্গে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা কেও, তাহলে আরও বেশি উপযুক্ত সিভিক কর্মী সুযোগ পাবেন তাদের যোগ্যতা দেখানোর। তবে এ ব্যাপারে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তাদের আশাবাদী হতে দেখা গেছে। তারা বলেছেন, “কিছুদিন আগেই রাজ্যের মন্ত্রিসভা কর্তৃক জানানো হয়েছে পুলিশের কনস্টেবল পদে বিরাট সংখ্যায় নিয়োগ হতে চলেছে।
জরুরীভিত্তিতে রাজ্যজুড়ে 35 হাজার সিভিক ভলেন্টিয়ার নিয়োগ। রইল বিজ্ঞপ্তি এবং আবেদন
আর যেহেতু সিভিক কর্মীদের এই পদে নিয়োগ করার প্রথা ইতিমধ্যেই চালু আছে, তাই খানিকটা আশা করা যায় যে এই প্রস্তাব গ্রহণ করা হলেও হতে পারে (Constable Recruitment).” পুলিশ কর্তারা আরো জানিয়েছেন, “রাজ্যের বহু থানায় দক্ষ পুলিশ কর্মীর যথেষ্ট অভাব রয়েছে। বেশিরভাগ থানাতেই কাজকর্ম চালাতে হয় সিভিক ভলেন্টিয়ারদের দিয়ে। তাই যদি আরো বেশি সংখ্যক সিভিক কর্মীকে এই পদে কর্মী হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় তাহলে তার দ্বারা উপকার হবে পুলিশ প্রশাসনেরই।”
যদিও এ ব্যাপারে তাদের একটা আশঙ্কার দিক আছে। রাজ্যের বেশিরভাগ জায়গায় সিভিক ভলেন্টিয়ারদের (Civic Volunteer) নাকি দুর্নীতিগ্রস্ত বলে মনে করেন সাধারণ মানুষেরা। তোলাবাজি, জনগণকে হেনস্থা, এমনকি রাজনৈতিক নেতাদের পক্ষে থেকে কাজ করেন তারা, এই সমস্ত অভিযোগ অনেক রাজ্যবাসীর। তাই পুলিশের কর্মকর্তাদের আশংকা যদি সিভিক ভলেন্টিয়ারদের আরো বেশি পরিমাণে পুলিশে নিয়োগ করা হয় তাহলে মানুষ হয়তো সে বিষয়টিকে ভালো চোখে দেখবে না।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুলিশের এক প্রাক্তন আইজি শ্রী পঙ্কজ দত্ত এ ব্যাপারে তার মত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘পুলিশে কাজ করতে যে শারীরিক সক্ষমতা দরকার, তা অনেক সিভিক ভলান্টিয়ারের (Civic Volunteer Recruitment) আছে। তবে তাঁরা যদি রাজনৈতিক রঙ ভুলে বাহিনীতে কাজ যোগ দেন, তা হলেই আদতে প্রশাসনের লাভ হবে। এ ব্যাপারে প্রশাসনের কর্তাদেরও দায়িত্ব থাকবে।’’ তবে সবকিছুর পরেও বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ থেকে যায়। কারণ এ ব্যাপারে কোন নিশ্চয়তার আভাস এখনো পর্যন্ত মেলেনি রাজ্যের তরফ থেকে। মন্ত্রীসভায় যা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে সেটাই মেনে নিতে হবে সকলকে।
Written by Nabadip Saha.