পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের মাথায় হাত। পুজোর আগে কড়া নির্দেশ রাজ্য সরকারের।
আর কিছুদিন পরেই আসছে বাঙালির সেরা উৎসব দুর্গাপুজো। তাই এই মুহূর্তে সাধারণ মানুষের সাথে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের (West Bengal Government Employees) ও উৎসবের আমেজে উত্তেজনার শেষ নেই। সমগ্র রাজ্য জুড়ে পুজোর প্রস্তুতি এখন তুঙ্গে।
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের নির্দেশিকা।
স্কুল পড়ুয়া ছাত্রছাত্রীরা থেকে শুরু করে সরকারি কর্মচারীরা পর্যন্ত দিন গুনছেন ছুটির আশায় এখন। কবে পুজো আসবে? আর কবে একটানা লম্বা ছুটিতে আনন্দে মেতে উঠবেন তারা? এই অপেক্ষাই চলছে তাদের মধ্যে। কিন্তু তাদের এই আশায় এবার কার্যত জল ঢালল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। যদিও এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সম্পূর্ণ সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে। আর সাধারণ মানুষের পরিষেবা দেওয়াই সরকারি কর্মীদের প্রধান ও অন্যতম কাজ।
রাজ্য সরকারি কর্মীদের নিয়ে জারি করা হলো এক গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশিকা। পুজোর আগে জরুরী বিভাগের কর্মীদের সমস্ত ছুটি বাতিল করার ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। এই নির্দেশ প্রধানত তিনটি কারনে। আর এক সাথে তিনটি ইস্যু সৃষ্টি হওয়ায় কার্যত বিপুল সংখ্যক কর্মী পুজোর ছুটিতেও নিজ কর্তব্য পালন করে যাবেন।
মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং এ বিষয়ে বার্তা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন এখন কোনভাবেই ছুটির সিদ্ধান্ত জানানো যাবে না রাজ্যের কর্মচারীদের জন্য। পরে ভাবনা চিন্তা করে সরকার যদি মনে করে তখন এই ছুটি আবার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি। পুজোর মুখে এসে মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা সাধারন মানুষের জন্য হলেও রাজ্য সরকারি কর্মীদের একাংশকে একপ্রকার হতাশ করে তুলেছে।
ক্রমাগত ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে রাজ্যের নিচু এলাকা গুলিতে জল ঢুকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে রাস্তাঘাট। ক্রমশ ডুবে যাচ্ছে সেই সমস্ত এলাকাগুলি। ফলে বাড়ছে বন্যার সম্ভাবনা। ইতিমধ্যে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে প্রতিবেশী রাজ্য সিকিমের একাধিক এলাকা বন্যার কবলে পড়েছে। রাস্তাঘাট থেকে শুরু করে ঘরবাড়ি এমনকি বাঁধ গুলি ও চলে গিয়েছে জলের তলায়। আর শিলিগুড়ি এবং দার্জিলিং এলাকাগুলো সিকিমের কাছাকাছি হওয়ায় সেই বন্যার আঁচ এসেছে এই সমস্ত স্থানেও।
শুধু তাই নয় ঝাড়খণ্ডের একাধিক এলাকাতেও ঘটছে ভারী বর্ষণ। ফলে বন্যার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে সেই সমস্ত এলাকাগুলিতেও। আর এই আশঙ্কায় ভুগছে আমাদের রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ। সেই কারণে রাজ্যে সর্বত্র সতর্কতা জারি করা হয়েছে এই বিষয় নিয়ে। বিশেষত নিম্ন এবং বন্যা প্রবণ এলাকা গুলিতে মানুষজনদের অন্যত্র নিয়ে যাওয়ার কাজ শুরু করতে বলেছে রাজ্য সরকার। প্রশাসন কেও এ ব্যাপারে যথেষ্ট সচেতন থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী স্বয়ং।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, “সেচ দফতরের সচিব, বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের সচিব, বিদ্যুৎ দফতরের সচিব, পূর্ত দফতরের সচিব, সবাইকেই সতর্ক করা হয়েছে। তাদের কোন ধরনের ছুটি দেওয়া এখনই নিশ্চিত করছে না সরকার। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
বন্যা থেকে বাঁচাতেই হবে রাজ্যের আশঙ্কাময় এলাকা গুলিকে। ইতিমধ্যে আমরা বন্যায় মৃত তিনজনের দেহ পেয়েছি। সেই দেহগুলি সেনাদেরও হতে পারে এই আশঙ্কা করা যায়। তাই এই মুহূর্তে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে যাতে বন্যার দ্বারা আর কোন বিপদ রাজ্যে না ঘটে।”
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের দারুন সুখবর। পুজোর আগেই বকেয়া টাকা ঢুকে যাবে। নবান্নের নির্দেশ।
শুধু তাই নয় বন্যার কারণে বিভিন্ন বাঁধগুলি থেকে জল ছাড়ার কারণে রাজ্যে জলস্ফীতি ঘটার সম্ভাবনা দেখা দেবে বলে জানিয়েছে সরকার। তাই প্রশাসনের তরফের সবাইকে সতর্ক করে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেছেন সবাইকে এখন নিজের নিজের কাজে মনোযোগ দিতে হবে। পুজোর আগে সমস্ত ছুটির আশা ত্যাগ করে সকলকে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে রাজ্যকে বন্যার কবল থেকে রক্ষা করার কাজে।
আরও পড়ুন, কোলকাতা ফটাফট জেতার গোপন উপায়। এইভাবে অনলাইন লটারি খেললেই জেতা নিশ্চিত।
এছাড়া রাজ্যে ডেঙ্গি পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। বৃষ্টি কমার নামগন্ধই নেই। ডেঙ্গির সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে ভাইরাল ফিভার। যার জেরে ঘরে ঘরে জ্বর সর্দি কাশি লেগেই আছে। আর যার জেরে প্রতিনিয়ত ভীড় বাড়ছে হাসপাতালে। তাই পরিষেবা নিরবিচ্ছিন্ন রাখতে স্বাস্থ্য পরিষেবার সাথে যুক্ত কর্মীদের ও ছুটি বাতিল করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, রবিবার ও পঞ্চায়েত এলাকার স্বাস্থ্য কেন্দ্র ও খোলা থাকছে। এদিকে বর্ষার কারনে বিদ্যুৎ ও দমকল দপ্তরের কর্মীদের ও ছুটি বাতিল করা হয়েছে। অন্যদিকে পুলিশ কর্মীদের তো ছুটি নেই বললেই চলে।
Written by Nabadip Saha.