WBBPE Primary TET Case Judgement (প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরি বাতিল)

৩৬ হাজার চাকরি বাতিলের নির্দেশ বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের, Primary TET মামলায় চাকরি বাঁচবে কিভাবে দেখুন।

Primary TET মামলায় ৩৬০০০ প্রাথমিক শিক্ষকের চাকরি বাতিলের নির্দেশ দিলেও তাদের এক্ষুনি চাকরি বাতিল হচ্ছে না। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এর নির্দেশে ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ বাতিল (Primary Teachers Recruitment Scam) হচ্ছে। কিন্তু তারা আগামী ৪ মাস সময় পাবেন। কিন্তু চাকরি বাঁচাতে হলে এই ৪ মাসের মধ্যে যা কিছু করার করতে হবে? তাই আইন মেনে চাকরি বাঁচাতে হলে কি কি করতে হবে বোর্ড ও প্রাথমিক শিক্ষকদের, জেনে নিন।

আদালতের দেওয়া সেই সময়ের মধ্যে রাজ্য সরকারকে এই প্যানেলের বাকি শূন্যপদে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার কথা বলা হয়েছে। সেই Primary TET নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য রাজ্য সরকারকে ৩ মাস সময় ধার্য করে দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় প্রাথমিক শিক্ষক পদের ৩৬ হাজার চাকরি বাতিলের ঘোষণা করেন। সেই রায় ঘোষণা করে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ৩ মাসের মধ্যে রাজ্য সরকার নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে পারবে।

এই ৩৬ হাজার শিক্ষকের বাইরে আরও ৪৫০০ শিক্ষক যারা মধ্যে যারা ইতিমধ্যেই প্রশিক্ষণ নিয়েই A Category হিসেবে Primary TET দিয়ে চাকরি পেয়েছেন তাদের চাকরি থাকবে। যারা পরবর্তীতে NIOS থেকে ODL মোডে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন তারাও নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বসতে পারবেন। শুধু তাই নয়, ২০১৬ সালে ২০১৪ সালের Primary TET পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে যে সাড়ে ৪২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগ হয়েছিল, তার মধ্যে এই ৩৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের রায় দেন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়।

যেহেতু তারা প্রশিক্ষণ নেন নি তারা অপ্রশিক্ষিত বলেই তাদের চাকরি বাতিলের রায় দেওয়া হয়। তবে তারা সরকারের Primary TET নিয়োগ প্রক্রিয়া বসতে পারবেন। প্রাথমিক শিক্ষক পদে যে ১ লক্ষ ২৫ হাজার চাকরিপ্রার্থী ইন্টারভিউ বা পরীক্ষা দিয়েছিলেন তারাও পুরোপুরি ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ায় বসার সুযোগ পাবেন। যারা মাঝে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন, তারাও ইন্টারভিউতে বসতে পারবেন। কিন্তু যারা প্রশিক্ষণ নেননি তাদের চাকরি বাতিল হচ্ছে।

নিয়ম অনুযায়ী, চাকরি পাওয়ার ২ বছরের মধ্যে প্রশিক্ষণ নেওয়া আবশ্যক। NCTE এর গাইড লাইনে বলা রয়েছে। তবে কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় যে রায় দিয়েছেন, সেখানেই এই ৩৬ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক আগামী ৪ মাস স্কুলে যেতে পারবেন। তবে প্যারা টিচারের (Para teacher) হারে বেতন পাবেন। রাজ্য সরকার ৩ মাসের মধ্যে নিয়োগ প্রক্রিয়া (Teachers Recruitment Process) চালু করবে বলে জানিয়েছে আদালত।

সেক্ষেত্রে নিয়োগ প্রক্রিয়ার খরচ তৎকালীন বোর্ড সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের কাছ থেকে নিতে পারবে রাজ্য সরকার। ২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নিয়ম মেনে নিয়োগ হয়নি, এই অভিযোগ করে ১৪০ জন পরীক্ষার্থী মামলা দায়ের করেন। সেখানে সংরক্ষণ নিয়ম না মানা, Aptitude Test না নেওয়া সহ বিভিন্ন অভিযোগে এই মামলা দায়ের করা হয়। সেই মামলার রায় ঘোষণা করতে গিয়েই বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় এই ৩৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি (Primary TET) বাতিলের নির্দেশ দেন।

তবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে সভাপতি জানিয়েছেন, এরা কেউ এখন আর অপ্রশিক্ষিত নন। সকলেই প্রশিক্ষণ নিয়েছেন। প্রত্যেকেই শিক্ষক হওয়ার যোগ্য। জানা গিয়েছে, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে নবান্ন উচ্চ আদালতে যেতে পারে। আইনি প্রক্রিয়া নিয়েও ইতিমধ্যে আলোচনা শুরু হয়েছে বলেই জানা গিয়েছে।

আরও পড়ুন, স্কুলে স্কুলে গরমের ছুটি নিয়ে নতুন নির্দেশ।

এদিকে যোগ্য প্রার্থীরা যারা নিজের যোগ্যতায় চাকরি পেয়েছেন, তাদের ও চাকরি গেলে ভালো লাগবে না, স্বয়ং জানিয়েছিলেন বিচারপতি। কিন্তু আকস্মিক এই রায় ঘোষণায়, তারা ও যে বিপদের মধ্যে পড়ে গেলেন তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আর ৫ বছর আগের দেওয়া ইন্টারভিউ ভালো হয়েছিলো বলে তারা চাকরি পেয়েছিলেন। কিন্তু এখন আবার ইন্টারভিউ ভালো হবে তার কি নিশ্চয়তা?

তাই এই রায়ে যে সম্পূর্ণ ভাবে নিরপরাধেরা চাকরি পাবেন, আর অপরাধীরা সাজা পাবেন, সেটা নিশ্চিত করে বলা যায় না। আর তাছাড়া এতে প্রকৃত মেধাবী প্রার্থীও, একজন ও যে বঞ্চিত হবেনা, সেটাও হলফ করে বলা যায়না। আর মনে রাখতে হবে, এই ৩৬০০০ শিক্ষকের সাথে জড়িয়া রয়েছে, আরও ৩৬০০০ পরিবারের ভবিষ্যৎ। আর সরকারি ভাবে ও নিয়মের মধ্যে ৫ বছর চাকরি করার পর তাদের কি ডিমোশন করে পার্শ্ব শিক্ষক হিসেবে ঘোষণা করা যায়? এটা কি আইন সিদ্ধ? এই বিষয়ে মতামত নিচে কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।

আরও বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।