বকেয়া ডিএ protest for wb da

বকেয়া ডিএ মেটাতে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারকে রীতিমতো চাপে ফেলতে এই উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের অরাজনৈতিক সংগঠন, “সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ”। ইতিমধ্যেই তারা শুরু করেছেন লাগাতার অনশন। এই অনশন আরও বেশি জোড়ালো হবার ইঙ্গিত দিয়েছে সংগঠন। আর আগামী 13ই ফেব্রুয়ারি সারা রাজ্য জুড়ে আহবান করা হয়েছে গণছুটির। সরকারের ওপরে চাপ বাড়ছে, কি হবে এই রাজ্যের সরকারি কর্মীদের বেতন ভবিষ্যৎ! এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

Advertisement

বকেয়া ডিএ আন্দোলন তীব্রতর করতেই এই 13ই ফেব্রুয়ারির গণছুটি।

ডিএ বাড়ানো এবং বকেয়া ডিএ মেটানোর দাবিতে গত 15 দিন ধরে আন্দোলন করে চলেছেন রাজ্যের সরকরি কর্মচারীরা। তবে কর্ণপাত করেনি সরকার। তাই সরকারের উপর চাপ বাড়াতে এবার আমরণ অনশন শুরু করেছেন তিনজন সরকারি কর্মী। ধর্মতলার শহীদ মিনারের পাদদেশে আন্দোলন করছেন সরকারি কর্মীরা। তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে বকেয়া ডিএ মেটানোর দাবিতে শুরু হওয়া এই আন্দোলনের তীব্রতা বাড়াতেই বিক্ষোভকারী সরকারি কর্মচারীরাদের মধ্যে তিনজন গতকাল থেকে আমরণ অনশন শুরু করেছেন।

গত দুই সপ্তাহ ধরে চলা এই ডিএ আন্দোলনের শুরুর দিকে প্রতীকী অনশন করতে দেখা গিয়েছিল সরকারি কর্মীদের। তারপরে রিলে অনশন করেন তারা। তবে এখনও পর্যন্ত সরকার ডিএ মেটানো নিয়ে কোনো নোটিশ দেয় নি। মাঝে কর্মবিরতির হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন সরকারি কর্মীরা। তারপরেই আমরণ অনশন শুরু করলেন তিন কর্মচারী। তবে প্রথমে দু’জন সরকারি কর্মীর অনশন করার কথা থাকলেও পরে তিনজন সরকারি কর্মী আমরণ অনশন শুরু করেন।

Ads

অনশনরত এক সরকারি কর্মচারী সংবাদ মাধ্যমে বলেন, ‘সরকার আমাদের এই পদক্ষেপ করতে বাধ্য করেছে। যে দুই ন্যায্য মৌলিক অধিকারের দাবিতে আমরা আন্দোলন শুরু করি, সরকার তা মেনে নেয়নি। সরকার আমাদের দাবিতে কর্ণপাত করেনি বিগত 15 দিন ধরে। তাই আমরা বাধ্য হয়েছি। সরকার যাতে আমাদের দাবি মানে, এর জন্য আমাদের যতটা যেতে হবে আমরা যাব।’ তবে কেবল তিনজনের আমরণ অনশনেই থেমে থাকবেন না সরকারি কর্মীরা। আন্দোলনরত কর্মীদের পক থেকে জানানো হয়েছে, ডিএ মেটানো নাহলে অনশনরত কর্মচারীর সংখ্যা দিনে দিনে বাড়বে।

Advertisement

পশ্চিমবঙ্গে মহার্ঘ ভাতা নিয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ ঘোষণা, কর্মীদের দোষেই এতদিন DA পাননি, কারন জেনে নিন।

অন্যদিকে ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীদেরকে চিঠিও লেখা হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের তরফে। এই প্রসঙ্গে এক আন্দোলকারী জানান, ‘আমরা তাঁদের প্রতি আবেদন করেছিলাম, যে ভুল পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মচারীর করেছিলেন, সেটা যেন তারা আবার না করেন। আমরা বিগত 12 বছর ধরে ভুগছি। কারণ তিনি (সম্ভবত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়) মিথ্যা ছাড়া সত্য কিছু বলেন না। আমাদের রাজ্যের সরকারি কর্মচারীদের পাহাড় প্রমাণ বঞ্চনার কথা জানিয়েই ত্রিপুরার সরকারি কর্মীদের চিঠি লিখেছি আমরা।’

Advertisement

পাশাপাশি, রাজ্য সরকারি কর্মীদের অপর যৌথ মঞ্চ কো-অর্ডিনেশন কমিটির তরফে 17 তারিখ বিধানসভা অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি রাজ্য সরকারি কর্মচারি পরিষদের তরফে দফতরে দফতরে বিক্ষোভের ডাক দেওয়া হয়েছে। 10 তারিখ তারা খাদ্য ভবনে বিক্ষোভ কর্মসূচি নিয়েছে। রাজ্য সরকারি কর্মচারি পরিষদের তরফে দেবাশিস শীল বলেন, “আমরা DA নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আইনি লড়াই লড়ছি। রাজ্য সরকারি কর্মীদের প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। রাজ্য সরকার মহার্ঘ্যভাতা মেটানোর জন্য কোনও সদর্থক ভূমিকা পালন করছে না।”

Ads

“আইন না মানলে দেশে থাকার অধিকার নেই”, বকেয়া ডিএ আন্দোলনকারীদের উদ্দেশ্যে রাজ্যের মন্ত্রী!

পশ্চিমবঙ্গের সরকারি কর্মীদের আন্দোলনের প্রতি সমর্থন জানিয়ে ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীরা পালটা পত্র পাঠাবেন বলে জানা গেছে। তবে এখানেই শেষ নয়। ত্রিপুরার সরকারি কর্মীরা নাকি ধর্মতলার আন্দোলনস্থলেও আসতে চলেছেন। সব মিলিয়ে সরকারের উপর চাপ যে বাড়তে চলেছে তা বলাই যায়। এত কিছুর পরেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ডিএ মেটাতে উদ্যোগ নেন নাকি এই প্রসঙ্গে মুখে কুলুপ এঁটে থাকেন, তা সময় বলবে।
Written by Parna Banerjee.

Advertisement

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *