নিয়োগ দুর্নীতি তথা Primary TET Scam

নিয়োগ দুর্নীতি তথা Primary TET Scam কাণ্ডে নাম উঠে এলো আবারো বহু শিক্ষকের। যার জেরে ৪২ হাজার জনের নিয়োগ তালিকা বা পুরো প্যানেল লিস্ট চেয়ে পাঠালো আদালত। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট মারফত এমনই একটি শুনানি দেওয়া হয়েছে। চলতি সপ্তাহেই আদালত কক্ষে উঠে আসে এই মামলা এবং তারপরই জেলার স্কুল কাউন্সিলের কাছে নিয়োগ প্যানেল চেয়ে চিঠি পাঠান তারা।

WBBPE Primary TET Scam High Court Judgement

কোর্ট জানিয়েছে, ৪২০০০ জনের নিয়োগ প্যানেল (Primary TET Scam) দেখে বিচার করা হবে কারা আদেও দুর্নীতি করেছেন। তারপর অপরাধীদের চাকরি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেবে আদালত। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এখন কর্মরত শিক্ষকদের মনে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। পরবর্তীতে কি জানায় হাইকোর্ট সেই অপেক্ষায় উৎসুক হয়ে রয়েছেন তারা।

পশ্চিমবঙ্গে গত দশ বছর ধরে প্রাথমিক থেকে শুরু করে উচ্চ প্রাথমিক এবং উচ্চমাধ্যমিক বিভিন্ন পর্যায়ে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষাগুলিতে পরীক্ষার্থীরা শিকার (Primary TET Scam) হয়েছেন বিভিন্ন ধরনের দুর্নীতির (Primary TET Scam). যেমন কোনোটিতে প্রশ্নপত্রে কারচুপি, কোনোটিতে আবার সঠিক প্রশিক্ষণ না থাকা সত্ত্বেও ঘুষ দিয়ে চাকরি, কোনোটিতে জাল সার্টিফিকেট ব্যবহার করে চাকরি এছাড়াও আরো অনেক দুর্নীতির নিদর্শন রয়েছে এই সমস্ত ক্ষেত্রে।

এই সকল মামলার জেরে একাধিকবার কোর্টে পেশ করা হয়েছে বিভিন্ন সাক্ষ্য প্রমাণ। আর সেগুলির উপর ভিত্তি করে কোর্টে বিচারাধীন থাকা এই মামলা গুলির শুনানিও দিয়ে চলেছে বিচারপতিদের ডিভিশন বেঞ্চ। যার মাধ্যমে উঠে আসছে বিভিন্ন চাঞ্চল্যকর তথ্য। আর এবার এরকমই আরেকটি বিস্ময়কর দুর্নীতি ধরা পড়ল কোর্টে।

অভিযোগ ছিল প্রাথমিকের মোট ২২০৭ জন শিক্ষক নাকি বেআইনি নিয়মে চাকরিতে নিয়োগ (WBBPE Primary TET Scam) পান। কোর্ট আগেই সিবিআই এর হাতে এই বিষয়টি তুলে দিয়ে তাদেরকে তদন্ত চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল। আর তারই পরিপ্রেক্ষিতে সেই তথ্য বর্তমানে পেশ করা হয়েছে আদালতে। মামলাটি ওঠে বিচারপতি অমৃতা সিং এর ডিভিশন বেঞ্চের কাছে। তারপর শুনানি দিয়ে এদিন আদালতে জানানো হয় যে আদালত কর্তৃপক্ষ মোট ৪২ হাজার জনের নিয়োগ তালিকা বিচার করবে আগে।

কারণ আদালতের মত, নিয়োগ প্যানেল না দেখে বোঝা যাবে না কারা আদৌ দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত আর কারা নয়। সেই অনুযায়ী রাজ্যের প্রতিটি জেলার প্রাথমিক স্কুল কাউন্সিলের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে আদালত। আগামী ২০শে ডিসেম্বর তারিখে এই মামলাটির শুনানি ঘোষণা করবে হাইকোর্ট। আর তার আগেই ডিপিএসসি চেয়ারম্যানদের নিয়োগ প্যানেল জমা করতে বলা হয়েছে আদালতের কাছে।

আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া DA নিয়ে বড় সুখবর। সরকারি কর্মীদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মুখ্যমন্ত্রী।

আদালতের এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের আইনজীবী সুবীর সান্যাল এবং লক্ষী গুপ্ত জানিয়েছেন, “নিয়োগ প্যানেল প্রকাশ (WBBPE Primary TET) করার কোন আইন নেই। যখন নিয়োগ প্যানেল তৈরি করা হয়েছিল একসঙ্গে তা করেনি বোর্ড। জেলাভিত্তিক ভাবে আলাদা আলাদা করা হয়েছিল তা।” আবার WBBPE প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তরফে বলা হয়েছে, “আজ থেকে ছয় বছর আগে নিয়োগ প্যানেল প্রকাশ করা হয়েছিল।

Click Here

এখনো সেই প্যানেল বোর্ডের কাছে রয়েছে। কিন্তু সেটা পুনরায় আর প্রকাশ করা যাবে না।” তবে নিজের সিদ্ধান্তে অনড় থেকে কোর্ট খারিজ করেছে তাদের সেই দাবি। বিচারপতি অমৃতা সিং বলেছেন, “আমি প্যানেল দেখতে চাই। কারণ এর ওপর অনেক প্রার্থীর ভবিষ্যৎ জীবন নির্ভর করছে।” পর্ষদ কে কটাক্ষ করে তিনি ব্যক্ত করেছেন, “গঙ্গা দিয়ে জল অনেক গড়িয়েছে। এখন আপনাদের কথাকে গুরুত্ব দিলে আদালতের চলবে? তার থেকে ভালো আপনারা সুপ্রিম কোর্টে চলে যান।
Written by Nabadip Saha.

আরও পড়ুন, পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষকদের আচরণবিধি প্রকাশ। চাকরিরত শিক্ষক ও টেট পাশ হবু শিক্ষকদের এই নির্দেশিকা মানতে হবে।