WBBPE TET – প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ মামলার উপর স্থগিতাদেশ দিলো আদালত। কারো পৌষ মাস কারও সর্বনাশ।

টেট মামলায় আপাতত ব্যাকফুটে WBBPE TET পরীক্ষার্থীরা। হাইকোর্টের রায়কে স্থগিত করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। যার ফলে কার্যত একদিকে কিছু প্রার্থীদের মাথায় হাত, অন্য দিকে বাকি পরীক্ষার্থী ও সফল প্রার্থীদের মুখে হাসি। মামলায় এক পক্ষের মুখে হাসি আর এক পক্ষের পরাজয় হবে, এটাই নিয়ম। তবে পশ্চিমবঙ্গে বর্তমানে SSC ও WBBPE TET পরীক্ষা নিয়ে এতো মামলা ও অভিযোগ রয়েছে, তাতে কার ভালো আর কার খারাপ বলা মুশকিল।

WBBPE TET Case Supreme Court Jaudgement

রাজ্যে টেট নিয়ে আদালতে চলা মামলায় এবার বড় পরাজয়ের সম্মুখীন হলেন পরীক্ষার্থীরা। বিগত ১০ বছরে শিক্ষক নিয়োগের বিভিন্ন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কেস এখনো বিচারাধীন কোর্টে। ইতিমধ্যে কিছু কেসের রায় ঘোষণা যদিও হয়েও গেছে। এবং সেগুলির প্রায় বেশির ভাগে ন্যায়বিচার পেয়েছেন মামলাকারী পরীক্ষার্থীরা। তবে এবারে ভাগ্য আর সঙ্গ দিলো না এই সকল মামলা কারীদের।

সম্প্রতি হাইকোর্টে টেট দুর্নীতি নিয়ে করা এক মামলার রায় ঘোষণা হতেই সুপ্রিম কোর্ট মারফত স্থগিতাদেশ দেওয়া হলো তাতে। উল্লেখ্য, গত শুক্রবারই কলকাতা হাইকোর্টে পরীক্ষার্থীদের দাবিকে সমর্থন করে সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ৯৪ জন WBBPE TET শিক্ষকের চাকরি বাতিলের রায় ঘোষণা করেছে বিচারপতি সমাপ্তি সিনহার ডিভিশন বেঞ্চ। অভিযোগ ছিল টেট পাশের নথি ছাড়াই নাকি এরা চাকরি করছিল। কিন্তু এবারের মামলায় আর জয় হল না পরীক্ষার্থীদের। কোন মামলা? কেনই বা হাইকোর্টের রায় স্থগিত করল সর্বোচ্চ আদালত? জেনে নিন।

২০১৪ সালে যে WBBPE TET তথা প্রাথমিক টেট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়েছিল রাজ্য জুড়ে সেই নিয়ে ২০১৮ সালে কোর্টে দায়ের করা হয় মামলা। এই সালের পরীক্ষায় যে প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছিল তাতে মোট ৬টি প্রশ্ন ভুল পাওয়ার দরুন পরীক্ষার্থীরা এই বিক্ষোভে নামেন। অবশেষে হাইকোর্টের বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকদের নিয়ে এই বিষয়ে একটি বৈঠক করেন।

WBBPE TET নিয়ে আদালতের রায়

এই বৈঠকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে যে সমস্ত ছাত্রছাত্রীরা এই ৬টি প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার জন্য নেগেটিভ মার্কিং পেয়েছেন তাদেরকে অবশ্যই ৬ নাম্বার বাড়তি দিতে হবে। কারন তারা যাচাই করে দেখেছেন সেই প্রশ্নগুলি সত্যিই ভুল করা হয়েছিল। পরবর্তীকালে এই মামলাটি আবার ওঠে বিচারপতি তালুকদারের বেঞ্চে এবং তারও পরে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ এটিকে গ্ৰহণ করে। তবে তাদের দুজনেরই মত একই ছিল।

প্রাইমারী টেট মামলা (WBBPE TET Scam)

WBBPE TET প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ ভুল প্রশ্ন করে সেই সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়া ছাত্রছাত্রীদের নেগেটিভ মার্কিং দিয়ে মোটেই ঠিক কাজ করেনি। সেইমতো প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ কে আদালত মারফত জেরা করা হয়। আর এই শুনানি জানানো হয় যে পরীক্ষার্থীরা অবশ্যই তাদের প্রাপ্ত নম্বরের ওপর বাড়তি ৬ নম্বর পাবেন।

আরও পড়ুন, ২০১৪ সালের সফল টেট শিক্ষকদের চাকরি বাতিল, বিস্তারিত জেনে নিন।

সুপ্রীম কোর্টের রায়

কিন্তু এই রায় মানলো না সুপ্রিম কোর্ট। MAT 1594 এর পরিপ্রেক্ষিতে এবার সরাসরি স্থগিত করে দেওয়া হল হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে। বলা হলো হাইকোর্ট এখনই প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের ওপর কোন জোর করতে পারবে না পরীক্ষার্থীদের ৬ নম্বর ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য। ভবিষ্যতে এই কেসটি আবার রিওপেন করা হবে। তখন যদি প্রমানিত হয় মামলাকারীদের দাবি সঠিক, তবেই এর চূড়ান্ত রায় ঘোষণা করবে আদালত।

আরও পড়ুন, রাজ্যের স্বাস্থ্য বিভাগে প্রচুর কর্মী নিয়োগ। চাকরি হবে নিজের জেলাতেই।

সুপ্রিম কোর্টের এই ঘোষণার পর বর্তমানে স্বস্তি পেল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। অন্যদিকে আবারও ধাক্কা খেতে হল টেটের পরীক্ষার্থীদের। সুতরাং এই রায়ে একদিকে রাজ্য সরকার ও পর্ষদ যেমন স্বস্তিতে, আর তার সাথে স্বস্তিতে রয়েছেন সফল প্রার্থীরা। অপর দিকে নিরাস হলেন বেশ কিছু চাকরি প্রার্থীরা। যারা ওই ৬ টি প্রশ্নের নম্বর এর জন্য আবেদন করেছিলেন। আপডেট আসছে।
Written by, Nabadip Saha.

আরও পড়ুন, জেলায় জেলায় আশাকর্মী নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি। নিজের এলাকায় চাকরি।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button