পুজোর আগেই পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সরকারি কর্মীদের বেতন বৃদ্ধি, প্রমোশন নিয়ে সুখবর দিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

এবার থেকে রাজ্য সরকারি কর্মীদের পদোন্নতি এবং বেতন বৃদ্ধির জন্য এই নিয়ম চালু করল সরকার। উপকৃত হবেন সকলেই।
বেতন বৃদ্ধি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ঝামেলার কথা কারোরই অজানা নয়। টানা দু’বছর ধরে পশ্চিমবঙ্গ উত্তাল হয়েছিল রাজ্যের কর্মী সংগঠনের এই বিক্ষোভের ফলে।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারি কর্মীদের সুখবর

কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার জন্য ক্রমশ চাপ দিতে থাকে তারা সরকারের প্রতি। এদিকে সরকার তাদের সেই দাবিতে কর্ণপাত করা তো দূরে থাক, তাদের পুরনো বকেয়া মহার্ঘ ভাতা টুকুও মেটাতে চায়নি প্রথমদিকে। আর এই নিয়ে শুরু হয় বিক্ষোভ, ঝামেলা। এমনকি শেষ পর্যন্ত তা গড়ায় হাইকোর্ট ছাড়িয়ে সুপ্রিম কোর্টের দুয়ার পর্যন্তও।

যদিও গত জুন মাস থেকে রাজ্য সরকারের কর্মীরা ৩ শতাংশ বর্ধিত মহার্ঘ ভাতা পেয়ে আসছেন, কিন্তু তাতেও মোটেই খুশি নন তারা। তাদের সমস্ত বকেয়া টাকা মিটিয়ে দেওয়া এবং বেতন বৃদ্ধি করার দাবিতে এখনো পর্যন্ত পথে নেমে বিক্ষোভ করে চলেছেন তারা। আর এই সমস্ত সরকারি কর্মীদের শান্ত করতে এবার নতুন কর্মসূচি গ্রহণ করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গ অর্থ দপ্তরের তরফে জারি করা হয়েছে রাজ্য সরকারি কর্মীদের পদোন্নতি এবং বেতন বৃদ্ধি বিষয়ক একটি গুরুত্বপূর্ণ বিজ্ঞপ্তি।

যার মাধ্যমে সরকার আশা করছে এই সমস্ত সরকারি কর্মচারীরা অনেকটাই খুশি হতে পারেন। কিন্তু কি বলা হয়েছে এই বিজ্ঞপ্তিতে? নিচে এ বিষয়ে আলোচনা করা হলো।
অর্থ দপ্তরের এই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে এবার থেকে আগের চেয়ে অনেক কম সময় পদোন্নতি ঘটবে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের। স্বাভাবিকভাবেই তাদের বেতন বৃদ্ধিও ঘটবে তার সঙ্গেই তাল মিলিয়ে।

চলতি বছরের 31 শে মে মুখ্যমন্ত্রীর কার্যালয় নবান্নে সরকারি কর্মী সংগঠনের সঙ্গে একটি জরুরী বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। অর্থ দপ্তরের সচিব রাও সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এই বৈঠকেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় যে এখন থেকে রাজ্য সরকারি কর্মীদের পদোন্নতি পাবার ন্যূনতম সময়সীমা কমানো হবে। কারণ উচ্চকক্ষের পদগুলিতে শূন্য পদের সংখ্যা কম হওয়ায় যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও অনেক ব্যক্তিকে কাজ করতে হয় নিচের স্তরে।

অন্যদিকে পদোন্নতি পাবার ন্যূনতম সময়সীমা এত বেশি হবার ফলে স্বাভাবিকভাবেই কর্মচারীরা চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের বয়সে চলে আসায় পদোন্নতি অথবা বেতন বৃদ্ধির সুযোগ পাওয়ার থেকে বঞ্চিত হন বলে মনে করেছে রাজ্য সরকার। সেই কারণেই এবারে এই নূন্যতম সময়সীমা কমানো হবে বলে ঠিক করা হয়েছে।

সরকারি নিয়ম অনুযায়ী বর্তমানে রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের গ্রুপ ডি থেকে গ্রুপে এ পর্যন্ত পদে ৩ টি মেয়াদের মধ্যে দিয়ে পদোন্নতি এবং বেতন বৃদ্ধি ঘটে থাকে। একটি ঘটে ৮ বছর পর, অন্যটি ঘটে ১৬ বছর পর, এবং তৃতীয়টি ঘটে ২৫ বছর পরে। এই স্কিমেই পরিবর্তন আনা হচ্ছে এবারে। এখন থেকে প্রথম পদোন্নতি পাবার মেয়াদ ৮ বছরই থাকবে। কিন্তু দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পদোন্নতি পাবার মেয়াদ কমিয়ে যথাক্রমে ১৫ বছর এবং ২৪ বছর করা হয়েছে।

এর ফলে কম সময় পদোন্নতি এবং বেতন বৃদ্ধি ঘটবে অনেক রাজ্য সরকারি কর্মীদের। যার কারণে সুখে জীবন কাটাতে পারবেন তারা।
তবে শুধু কম সময় পদোন্নতি পাবার ক্ষেত্রেই নয় রাজ্য সরকারের বিভিন্ন দপ্তর গুলিতে উচ্চকক্ষের পদ সংখ্যা আরো বাড়ানো হবে বলেও সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে নবান্নের বৈঠকে। যার ফলে সহজেই প্রোমোশনের সুযোগ ঘটবে অনেক কর্মচারীর।

Holiday for Karam Pujo (করম পুজোর ছুটি)

সাধারণত একটি দপ্তরে চার ধরনের পদ থাকে – সবচেয়ে নিচের পর্যায়ে থাকে গ্রুপ ডি যেমন পিয়ন, গার্ড ইত্যাদি জাতীয় পদগুলি, তৃতীয় পর্যায়ে থাকে গ্রুপ সি যেমন ক্লার্ক জাতীয় পদগুলি, দ্বিতীয় পর্যায়ে থাকে গ্রুপ বি যেমন সেকশনাল অফিসারের পদগুলি, এবং প্রথম পর্যায়ে অর্থাৎ সবচেয়ে উচ্চ পর্যায়ে থাকে সচিব এবং আমলা জাতীয় পদগুলি। এক্ষেত্রে বলা হয়েছে যে গ্রুপ এ এবং বি এই দুই ক্ষেত্রেই পদের সংখ্যা বৃদ্ধি করা হবে।

বাতিল হচ্ছে কয়েক লক্ষ SC ST OBC কাস্ট সার্টিফিকেট। মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ।

ইতিমধ্যেই বিশেষ কয়েকটি দপ্তরের গ্রুপ এ অর্থাৎ সচিব এবং আমলা জাতীয় পদগুলিতে অতিরিক্ত ১০ টি নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। এছাড়াও সেচ, পূর্ত, জলসম্পদ এবং PHE দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের জন্যও অতিরিক্ত পদ সৃষ্টি করেছে রাজ্য সরকার। সূত্রের খবর অনুযায়ী জানা গেছে, এইসব বিভাগে ইঞ্জিনিয়ার ইন চিফ থেকে সুপারিনটেনডিং ইঞ্জিনিয়ার পর্যায়ে মোট ১৬০টি নতুন পদ সৃষ্টি করা হয়েছে।

 শিক্ষক নিয়োগ মামলায় প্রাথমিক শিক্ষকদের ছাড়পত্র। এই নিয়ম মানলেই বেঁচে যাবে চাকরি।

রাজ্য সরকারের এই রূপ ঘোষণার পর স্বাভাবিকভাবেই খুশিতে মেতে উঠতে চলেছে সকল রাজ্য সরকারি কর্মীদের মন। কারণ এর মাধ্যমে একদিকে যেমন তারা কম সময়ে পদোন্নতি এবং বেতন বৃদ্ধির সুবিধা লাভ করবেন, তেমনি অন্যদিকে উঁচু ক্ষেত্রের পদগুলিতে অতিরিক্ত নতুন পদ সৃষ্টি করায় স্বাভাবিকভাবেই অনেক সংখ্যক কর্মচারীরা প্রোমোশনের মাধ্যমে সুযোগ পাবেন সেখানে যাবার। যার ফলে রাজ্য সরকারের বিশ্বাস আর কোন অভিযোগ তারা খাড়া করতে পারবেন না এবার থেকে সরকারের বিরুদ্ধে।
Written by Nabadip Saha.

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button